চট্টগ্রামের পাহাড়ে ৫০টি ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদ

ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। গতকাল দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম নগরের আকবরশাহ এলাকার রেলওয়ে পাহাড়ে।  ছবি-সৌরভ দাশ
ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। গতকাল দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম নগরের আকবরশাহ এলাকার রেলওয়ে পাহাড়ে। ছবি-সৌরভ দাশ

চট্টগ্রামে পাহাড়ের ঝুঁকিতে বসবাসরত ৫০টি বসতি গতকাল বুধবার উচ্ছেদ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে নগরের আকবরশাহ এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর–সংলগ্ন রেলওয়ের পাহাড়ে এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।

দুই সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম ও মো. ইসমাইল হোসেন অভিযানে নেতৃত্ব দেন। অভিযানে তালিকাভুক্ত ১০টি এবং নতুন গড়ে ওঠা ৪০টি ঘর ভেঙে দেওয়া হয়। পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদ তদারক করছে।

গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, আকবরশাহ এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের পেছনে রেলওয়ে পাহাড়টির অবস্থান। পাহাড়টিতে কয়েক বছর ধরে বসতি গড়ে ওঠে। তারা ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের খাঁজে বসবাস করছিল। সেখান থেকে সরে যাওয়ার জন্য আগেই তাদের বলা হয়েছিল। পরে উচ্ছেদের বিষয়ে তাদের নোটিশ দেওয়া হয়।

তৌহিদুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন পাহাড়টির পাদদেশ ও খাঁজে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ তালিকাভুক্ত ১০টি বসতি উচ্ছেদ করা হয়। এ ছাড়া সম্প্রতি গড়ে ওঠা দৃশ্যমান ঝুঁকিপূর্ণ ৪০টি বসতিও ভেঙে দেওয়া হয়। পরে জায়গাটি রেলওয়েকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। 

তবে স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান বলেন, তাদের আগে একবার সরে যেতে বলা হয়েছিল। এবার উচ্ছেদের আগে জানানো হয়নি।

উচ্ছেদ অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিয়া মোহাম্মদ, বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম ওয়াসা, রেলওয়ে, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের প্রতিনিধি ও পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম মহানগরের ১৪টি পাহাড়ে দ্বিতীয় ধাপে গতকাল থেকে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করেছে। ১৭ জুলাই পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চলবে।

এবার উচ্ছেদ কার্যক্রমে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ শেষে উদ্ধারকৃত জায়গা সংশ্লিষ্ট পাহাড়ের মালিক এবং নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাকে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তী সময় পাহাড়ে কোনো অবৈধ বসতি-স্থাপনা গড়ে উঠলে সংশ্লিষ্ট পাহাড় মালিক ও সংস্থাকে দায়ী করা হবে বলে তৌহিদুল ইসলাম জানান।

এর আগে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় ১৭টি পাহাড় চিহ্নিত করে ৮৩৫টি ঝুঁকিপূর্ণ পরিবার উচ্ছেদের জন্য সিদ্ধান্ত হয়। প্রথম ধাপে গত এপ্রিল-মে মাসে মতিঝরনা, বাটালি হিল, পোড়া কলোনি পাহাড়, এ কে খান পাহাড় এলাকায় ৩৫০টির মতো ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদ করা হয়। তবে অনেক জায়গায় আবার নতুন করে বসতি গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।