ইলিশের পরে এবার সিলভার কার্পের নুডলস

নিজেদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে তৈরি করা সিলভার কার্প মাছের নুডলস হাতে গবেষকেরা। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ, ৪ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো।
নিজেদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে তৈরি করা সিলভার কার্প মাছের নুডলস হাতে গবেষকেরা। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ, ৪ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো।

কিছুদিন আগে ইলিশের স্যুপ ও নুডলস তৈরি করে বেশ সাড়া ফেলেছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষকেরা। এবার সিলভার কার্প মাছের নুডলস তৈরির প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

নুডলস তৈরির প্রযুক্তিটি উদ্ভাবন করেছেন বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের মৎস্যপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ফাতেমা হক। ইলিশের স্যুপ ও নুডলসের প্রযুক্তিও এই বিভাগ থেকে উদ্ভাবন করা হয়েছিল।

ফাতেমা হক বলেন, সিলভার কার্প বিদেশি কার্পজাতীয় মাছ। দেশে প্রচুর পরিমাণে চাষ হলেও মাছটিতে কাঁটা বেশি থাকায় অনেকেই খেতে চান না। এতে এই মাছচাষিরা সঠিক বাজারমূল্য পান না। ভোক্তারাও মাছের স্বাদ ও প্রাণিজ আমিষ থেকে বঞ্চিত হন। তাই মাছটির স্বাদ অক্ষুণ্ণ রেখে নুডলস তৈরি করা হয়েছে। এতে একদিকে যেমন মাছকে সংরক্ষণ করা যাবে, অন্যদিকে চাষিরাও লাভবান হবেন।

বিভাগটির সম্মেলনকক্ষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এই নুডলসের প্যানেল টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়। গবেষক ফাতেমা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অর্থায়নে ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের সহযোগিতায় ২০১৭ সাল থেকে এই গবেষণা করছেন। এ গবেষণার সহযোগী ছিলেন একই বিভাগের অধ্যাপক মো. ইসমাইল হোসেন, মাস্টার্সের শিক্ষার্থী লাবিবা ফারজানা ও শামছুননাহার সীমা।

প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্পর্কে গবেষক বলেন, প্রথমে সিলভার কার্প থেকে মাংসল অংশ সংগ্রহ করা হয়। এরপর নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাছের স্বাদ, গন্ধ ও সংরক্ষণের বিভিন্ন নিয়ামক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। শেষে সব উপকরণ মিশিয়ে নুডলস তৈরি হয়।

ফাতেমা বলেন, প্রতি ১০০ গ্রাম নুডলসে আমিষের পরিমাণ ২৩.৮০ শতাংশ, লিপিড ৮.৬, শর্করা ৫৫.৫৪, অ্যাশ ২.৯৭ এবং পানির পরিমাণ ৯.০৯ শতাংশ। ১০০ গ্রাম নুডলস থেকে ৩৯৫ ক্যালরি সমমানের শক্তি পাওয়া যাবে।

বাজারজাত সম্পর্কে এ গবেষক বলেন, উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে তৈরি নুডলস এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে। বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে কথা হয়েছে, বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। আর এটা সম্ভব হলে ভোক্তারা ঘরে বসেই যেকোনো সময় নুডলসের মাধ্যমে কাঁটাবিহীন মাছের স্বাদ নিতে পারবেন।