পাহাড়ে রামবুটান স্বপ্ন দেখাচ্ছে

রামবুটান ফলছে রাঙামাটিতেও। সম্প্রতি শহরের লুম্বিনী গ্রামে।  ছবি: সুপ্রিয় চাকমা
রামবুটান ফলছে রাঙামাটিতেও। সম্প্রতি শহরের লুম্বিনী গ্রামে। ছবি: সুপ্রিয় চাকমা

প্রথমে মনে হতে পারে, আরে! লিচু না তো?

কিন্তু লিচুর দাড়ি বা চুল হলো কী করে? শত শত চুল!

ফলটার নাম রামবুটান। মালয়েশিয়ান ভাষায় রামবুটান শব্দের অর্থ চুল। চামড়ার ওপর চুল বা দাড়িগুলোর জন্যই ফলটির এই নাম। এ ফলের আদি উৎস মালয়েশিয়া আর ইন্দোনেশিয়া। এরপর তা ছড়িয়ে গেছে ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, ব্রুনেই, শ্রীলঙ্কায় ছড়িয়ে যায়। এখন বাংলাদেশেও এর চাষ হচ্ছে।

রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির কয়েকটি জায়গায় পরীক্ষামূলকভাবে রামবুটানের চাষ হচ্ছে। ফলনও ভালো। রাঙামাটি শহরের রাঙাপানি এলাকায় সময়ন চাকমা ২০০৭ সালে মাত্র একটি রামবুটান গাছ লাগিয়েছিলেন। সেই গাছ থেকে এখন প্রতিবছর ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার ফল বিক্রি করছেন। এ ছাড়া এ বছর এক লাখ টাকার বেশি চারা বিক্রি করেছেন।

সময়ন চাকমা জানান, তিনি ২০০৭ সালে থাইল্যান্ড থেকে দুটি রামবুটানের বীজ নিয়ে আসেন। বাড়ির আঙিনায় বীজ বপন করলে একটি চারা আসে। সেই চারা বড় হয়ে ২০১২ সালে কিছু ফল আসে। পরের বছর থেকে ফল বাড়তে থাকে। এখন গাছে সাড়ে পাঁচ থেকে আট হাজার ফল পাওয়া যাচ্ছে।

সময়ন চাকমা বলেন, ‘রামবুটান প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করি। এখন ফল কম বিক্রি করে চারা বেশি বিক্রি করছি। কারণ, ফলের চেয়ে চারার চাহিদা বেশি। প্রতি চারা ৯০ থেকে ১২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকার চারা বিক্রি করেছি। আমার রামবুটান নার্সারি থেকে তিন পার্বত্য জেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে চারা বিক্রি হচ্ছে।’

সুস্বাদু এই ফল খেতে মিষ্টি। ফলে প্রোটিন, চর্বি, ফ্রুকটোজ, ক্যালসিয়ামসহ ঔষধি গুণ রয়েছে। এ ফলের বাংলা নাম নেই। ইংরেজি নাম রামবুটান। বৈজ্ঞানিক নাম Nephelium Lappaceun। দেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম, গাজীপুরসহ বিভিন্ন কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক চাষ করা হচ্ছে ফলটির।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পবন কুমার চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে রামবুটান চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।’