নুসরাত অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসের প্রতীক: মালেকা বেগম

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের বাড়িতে তাঁর মা শিরিন আক্তারের (মাঝে) সঙ্গে মালেকা বেগম (ডানে)। ছবি: প্রথম আলো
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের বাড়িতে তাঁর মা শিরিন আক্তারের (মাঝে) সঙ্গে মালেকা বেগম (ডানে)। ছবি: প্রথম আলো

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান আগামী দিনে যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসের ‘প্রতীক’ হিসেবে কাজ করবেন। ভবিষ্যতে সমগ্র জাতি তাঁর কাছে থেকে অনুপ্রেরণা পাবে। যেকোনো অন্যায়-হয়রানির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস পাবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ফেনীর সোনাগাজীতে নুসরাত সম্পর্কে এ কথা বলেন ঢাকার সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির সোশিওলজি অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের চেয়ারপারসন ড. মালেকা বেগম। এ সময় নুসরাতের স্বজনদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন।

ড. মালেকা বেগম বৃহস্পতিবার বিকেলে সোনাগাজীতে নুসরাতের বাড়িতে যান। তাঁর বাবা–মা ও ভাইদের সঙ্গে দেখা করেন, কথা বলেন। এ সময় মালেকা বেগম ওই কথাগুলো বলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক আফরিন ইসলাম।

নুসরাতের প্রসঙ্গে মালেকা বেগম বলেন, স্কুল–কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ তাঁর (নুসরাত) মতো এভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করতে পারেননি। একজন মাদ্রাসাছাত্রী হয়েও নুসরাত শেষ পর্যন্ত লড়ে গেছেন সাহসের প্রতীক হিসেবে। হয়রানি, নির্যাতনের প্রতিবাদে নুসরাত তাঁর জীবন উৎসর্গ করে গেছেন।

নুসরাত জাহানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মালেকা বেগম। সঙ্গে ছিলেন নুসরাতের মা। ছবি: প্রথম আলো
নুসরাত জাহানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মালেকা বেগম। সঙ্গে ছিলেন নুসরাতের মা। ছবি: প্রথম আলো

মালেকা বেগম একজন লেখক, গবেষক ও নারীনেত্রী। তিনি ষাটের দশকের একজন ছাত্রনেত্রী।

গতকাল মালেকা বেগম ঢাকা থেকে ফেনী পৌঁছে সোনাগাজীতে নুসরাতের বাড়ি যান। সেখানে নুসরাতের বাবা এ কে এম মুছা, মা শিরিন আক্তার, বড় ভাই মাহমুদুল হাসান, ছোট ভাই রায়হান ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে দীর্ঘসময় কথা বলেন। নুসরাত কেমন ছিলেন, তা জানতে পারেন তিনি।

নুসরাতের সবশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা ও শৈশবের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খাদিজাতুল কোবরা মাদ্রাসায়ও যান মালেকা বেগম। তিনি নুসরাতের শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলেন। নুসরাতের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান মালেকা বেগম।

প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে মালেকা বেগম বলেন, নুসরাত সাহসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। তাঁর থেকে সমগ্র জাতির শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। আগামী প্রজন্ম নুসরাতের সাহসিকতায় উজ্জীবিত হবে।

মালেকা বেগম জানান, পরিবার, শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, নুসরাত শুধু অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদীই ছিলেন, তিনি ছিলেন বন্ধুবৎসল, পরোপকারী ও মেধাবী ছাত্রী।