সায়মাকে খুন করেছেন একজন

নিহত সামিয়া আফরিন সায়মার স্বজনদের আহাজারি। ওয়ারী, ঢাকা, ৫ জুলাই। ছবি: মাসুম আলী
নিহত সামিয়া আফরিন সায়মার স্বজনদের আহাজারি। ওয়ারী, ঢাকা, ৫ জুলাই। ছবি: মাসুম আলী

শিশু সামিয়া আক্তার সায়মাকে (৭) ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ থেকে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিহত শিশু সায়মার পরিবারের এক সদস্য। তবে এখনই আটক ব্যক্তির নাম প্রকাশ করতে চাইছেন না তিনি।

ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, ‘তদন্তের ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। আমরা অপরাধী চিহ্নিত করতে পেরেছি। হত্যাকারী একজনই। তদন্তের স্বার্থে আমরা বিস্তারিত এখন জানাচ্ছি না। আমরা খুব দ্রুত জানাব।’

আজ রোববার দুপুরে ওয়ারী থানার সামনে দেখা হয় সামিয়ার বাবা আব্দুস সালামের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুনেছি আমার মেয়ের হত্যাকারী শনাক্ত হয়েছে। হত্যাকারী অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। মামলার তদন্তের জন্য পুলিশ এখন নাম প্রকাশ করছে না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে সায়মার এক আত্মীয় জানান, ওই ভবনের এক বাসিন্দার আত্মীয়ই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। ওই ব্যক্তি অভিযোগ স্বীকার করেছেন। গতকাল রাতেই নারায়ণগঞ্জ এলাকা থেকে তাঁকে ধরা হয়েছে। বিষয়টি আরও কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

গত শুক্রবার রাত পৌনে আটটার দিকে ওয়ারীর বনগ্রাম মসজিদের সামনের ভবনের নির্মাণাধীন একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় সাত বছরের শিশু সামিয়া আফরিন সায়মার লাশ। সে সিলভারডেল স্কুলের ছাত্রী ছিল।

গতকাল শনিবার বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে সায়মার মরদেহের ময়নাতদন্ত করেন সোহেল মাহমুদ। তদন্ত শেষে সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘বাহ্যিকভাবে শিশুটির গলায় রশি দিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করার আলামত পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার ঠোঁটে কামড়ের চিহ্ন এবং যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে এবং হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে এ আলামত আমরা পেয়েছি।’ সোহেল মাহমুদ বলেন, এ ব্যাপারে আরও স্পষ্ট হতে হাই ভ্যাজাইনাল সোয়াবের জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সব নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। এসব প্রতিবেদন পাওয়া গেলে শিশুটির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

নিহত সায়মার বাবা আব্দুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাগরিবের আজানের সময় আমি নামাজ পড়তে মসজিদে যাই। মসজিদ থেকে ফেরার সময় সন্ধ্যার নাশতা কিনে বাসায় আসি। বাসায় এসে দেখি সায়মা নেই। আমি, আমার স্ত্রীসহ সায়মাকে খুঁজতে শুরু করি। ছয়তলা ও আটতলায় খুঁজে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে আবার আট তলায় খুঁজতে গিয়ে রান্নাঘরে তার লাশ পাওয়া যায়।’

আরও পড়ুন...