তিন প্রতারকের কাণ্ড!

সাদা রঙের মাইক্রোবাস। সামনে বড় হরফে লেখা ‘প্রেস’। ভেতরে বসা তিন ব্যক্তি। তাঁরা রাজশাহী শহর থেকে বাগমারা উপজেলায় যান। গণিপুর ইউনিয়নের মোহনগঞ্জ এলাকার একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরির সামনে গাড়ি থামান। গাড়ি নেমে পড়েন দুই ব্যক্তি। ফ্যাক্টরিতে গিয়ে নিজেদের পরিচয় দেন মিডিয়া ও প্রশাসনের লোক। গাড়ির ভেতরে ‘স্যার’ বসে আছেন। ‘স্যার’ ভ্রাম্যমাণ আদালত বসাবেন।

এমন পরিচয় দেওয়া পরে ফ্যাক্টরির মালিকের কাছে টাকা দাবি করেন দুজন। এ সময় ভয়ে ওই ফ্যাক্টরির মালিক আবদুর রউফ তাঁদের টাকা দেন। এরপর তাঁদের সটকে যাওয়ার পালা। তবে বিধি বাম!

ওই পথ ধরে যাচ্ছিলেন জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ হুমায়ূন কবির। হুমায়ূন কবিরের বাড়ি ওই এলাকায়। নাটোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ হিসেবে কর্মরত তিনি। ভিড় দেখে হুমায়ূন কবির এগিয়ে যান। ওই তিনজনকে দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। পরিচয়পত্রে বের করতে বললে তিনজন ভুয়া পরিচয়পত্র বের করেন। এরপর পুলিশ ডেকে ওই তিনজনকে ধরিয়ে দেন তিনি। আটক তিন ব্যক্তির নাম আবদুল জব্বার (৫০), রাশেদুল হক (৩৫) লিয়াকত আলী (৩৬)। পুলিশ তিনজনের কাছে থাকা ভুয়া পরিচয়পত্র জব্দ করেছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, সোমবার দুপুরে তিন ব্যক্তি মাইক্রোবাসে করে মোহনগঞ্জে আসেন। তাঁরা বাজারের অদূরে মাইক্রোবাস থামিয়ে বিস্কুটের ফ্যাক্টরিতে যান। সেখানে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে ফ্যাক্টরির মালিক দুই হাজার টাকা, চারটি সিগারেট, কিছু বিস্কুট ও কেক দিয়ে সমঝোতা করেন।

ফ্যাক্টরির মালিক আবদুর রউফ বলেন, তিনি ভয়ে ওই তিনজনকে টাকা দিয়েছিলেন। এ ছাড়া তাঁদের সম্মান করে ফ্যাক্টরির তৈরি বিস্কুট ও কেক দিয়েছিলেন।

বাগমারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান সোমবার রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ওই তিনজন প্রতারক বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় বিস্কুট ফ্যাক্টরি মালিকের ছেলে সুমন বাদী হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। মামলায় ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।