নেত্রকোনায় পাউবোর কাজে অনিয়ম

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় পাউবো আওতাধীর মহাদেও নদীর চিকুনটুপ এলাকার তীরে ধসে পড়েছে বালুভর্তি বস্তা।  ছবি: প্রথম আলো
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় পাউবো আওতাধীর মহাদেও নদীর চিকুনটুপ এলাকার তীরে ধসে পড়েছে বালুভর্তি বস্তা। ছবি: প্রথম আলো

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতাধীন মহাদেও নদের চিকুনটুপ এলাকায় কাজের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নদের তীরের ওই এলাকায় ফেলে রাখা বালুভর্তি বস্তা ধসে নদে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, জেলা পাউবো কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের চরম উদাসীনতা ও যোগসাজশে ঠিকাদার সঠিক কাজ না করায় এমনটি হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা পাউবো কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছরে নদের তীরে ওই অংশে ভাঙন রোধে প্রায় ২৬০ মিটার স্থানে ১৬ লাখ ২২ হাজার টাকা ব্যয়ে বালুর বস্তা ফেলার দরপত্র আহ্বান করা হয়। জরুরি কাজের অংশ হিসেবে কাজটি দেওয়া হয় ফজলুল হক নামের এক ঠিকাদারকে। কিন্তু ঠিকাদার নদের তীরে বাঁশের বেড়া দিয়ে কিছু বালুর বস্তা ফেলে দায়সারাভাবে কাজটি করেন। কাজে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখভালও করেনি। ফলে কাজটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কোনো উপকারে আসেনি। সম্প্রতি ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় বস্তাগুলো ধসে যায়। নদের পানি আরও বাড়লে ভাঙনের কবলে পড়তে পারে বরুয়াকোনা বাজারসহ চিকুনটুপ গ্রামের বেশ কিছু বসতবাড়ি ও জায়গা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নদের পাড়ের একজন বাসিন্দা বলেন, ঠিকাদার মনগড়াভাবে কাজটি করেছেন। কাজটি কেউ দেখভাল করেনি। কাজটি অত্যন্ত নিম্নমানের হওয়ায় বস্তা ধসে নদে বিলীন হচ্ছে। এ কাজে এলাকার মানুষের কোনো উপকার না হলেও লাভবান হয়েছেন ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অসাধু কিছু কর্মকর্তা।

রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহেরা খাতুন বলেন, নদের তীর ভাঙনরোধে সাময়িক সময়ের জন্য যে বস্তা ফেলা হয়েছিল, তা একেবারেই দায়সারা গোছের কাজ ছিল। ঢলের পানিতে বস্তাগুলো ধসে যায়। ওই স্থানসহ আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থায়ীভাবে পাথরের ব্লক ফেলার দাবি জানান তিনি।

মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় এ ব্যাপারে ঠিকাদার ফজলুল হকের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন বলেন, মহাদেও নদের তীরের কিছু অংশে বস্তা ফেলার কাজে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে ইতিমধ্যে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কাজটি পাউবোর নিয়ন্ত্রণে। নদের ভাঙন এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে একটি স্থায়ী গাইড ওয়াল নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে নেত্রকোনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, কাজটি গত অর্থবছরের জরুরি কাজ ছিল। এটি সরাসরি একজন ঠিকাদারকে শেষ করতে বলা হয়। কাজের মেয়াদ এক বছরই থাকে। তাই এবারের বর্ষায় এ কাজের কথা বলে কোনো লাভ নেই।