বিদ্যালয়ে ৩ দিনে মারা হলো ১০ সাপ

নাটোরের সিংড়া উপজেলার ৮ নম্বর শেরকোল ইউনিয়নের সোনাপুর-পমগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আবারও সাপের উপদ্রব বেড়েছে। গত তিন দিনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্লাস চলাকালীন ১০টি সাপ মেরেছে। সাপের উপদ্রবে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকেরাও রয়েছেন আতঙ্কে। এরই মধ্যে শিশু শ্রেণির ছুটি ঘোষণা করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

গত বছর প্রায় একই সময়ে বিদ্যালয়টিতে সাপের উপদ্রব দেখা দিয়েছিল। ওই সময় শিক্ষার্থীরা ২০টিরও বেশি সাপ মারতে সক্ষম হয়েছিল। এবারও শুধু একটি শ্রেণিকক্ষ থেকেই ১০টি সাপ মারা হয়। এ অবস্থায় ভয়ে শ্রেণিকক্ষগুলোতে পাঠদান করা হচ্ছে না। বারান্দায় ক্লাস নিতে হচ্ছে। তবে কোমলমতি শিশুদের মনে সাপের আতঙ্ক ভর করেছে। 

গতকাল মঙ্গলবার খবর পেয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের কয়েকজনের হাতে লাঠি। বিদ্যালয় চত্বরের জঙ্গলে অথবা বাতাসে বই–পুস্তক নড়ে উঠলেই ওই শিক্ষার্থীরা লাঠি নিয়ে ছুটে যায় সেদিকে। লাঠি নিয়ে পাহারারত পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র শাহেদ আলী ও সিফাত রহমান জানায়, তারা বিদ্যালয়ে এসে সাপ আছে কি না তা খুঁজে দেখে। তারা শিশু শ্রেণির শ্রেণিকক্ষ থেকে ১০টি সাপ মেরেছে। গত বছরও তারা অনেক সাপ মেরেছিল। শিক্ষার্থীরা ভয়ে বেঞ্চে পা উঠিয়ে বসে ক্লাস করে।

এদিকে স্কুল ভবনে আবারও সাপের উপদ্রব দেখা দেওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যেও সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা বিদ্যালয়ে সাপের উপদ্রবের কথা শুনে ছুটে এসেছিলেন। যেসব সাপ মারা পড়েছে, সবই বিষধর। তবে সেগুলো বাচ্চা সাপ। সাপের মা কোথাও লুকিয়ে রয়েছে। সুযোগ পেলে কাউকে না–কাউকে কামড়ে দেবে। এখানে এখন কোনো শিশুই নিরাপদ না। আর পুরোনো ভবনের কারণেই সাপের উপদ্রব বলে জানান অভিভাবকেরা।

সহকারী শিক্ষক শিরিনা সুলতানা জানান, গতকাল মঙ্গলবার তিনি শিশু শ্রেণির ক্লাস নেওয়ার সময় তিনটি সাপ বের হয়েছে। তারপর ওই কক্ষের ক্লাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাপের আতঙ্কে প্রতিদিনই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমছে। তিনি আরও জানান, গত বছর সাপের উপদ্রবে শিশুরা বেশ কিছুদিন বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ রেখেছিল।

প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানোর পর তিনি গতকাল সরেজমিনে বিদ্যালয় পরিদর্শন করে শিশু শ্রেণি ছুটি দিয়ে ওই কক্ষ সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছেন। 

সিংড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঈনুল হাসান মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, তিনি বিষয়টি জানার পর সরেজমিনে ওই বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন। আর সাপের উপদ্রব থেকে বাঁচতে শিশু শ্রেণি সংস্কার করাসহ বিদ্যালয়ের আশপাশ পরিষ্কার করা হচ্ছে।