বিএসএফের হাতে ১০ বছরে নিহত ২৯৪ বাংলাদেশি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফাইল ছবি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফাইল ছবি

২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ১০ বছরে সীমান্তে বিএসএফের হাতে ২৯৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন।

বিএনপির সদস্য হারুনুর রশিদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সীমান্তে ২০০৯ সালে ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫, ২০১১ সালে ২৪, ২০১২ সালে ২৪, ২০১৩ সালে ১৮, ২০১৪ সালে ২৪, ২০১৫ সালে ৩৮, ২০১৬ সালে ২৫, ২০১৭ সালে ১৭ এবং ২০১৮ সালে ৩ জন হত্যার শিকার রয়েছে।

তবে আগের তুলনায় সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা অনেকটা কমে এসেছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন। তিনি বলেন, তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সীমান্তে হত্যা ক্রমান্নয়ে কমেছে। ২০০৯ সালে যেখানে হত্যা হয়েছিল ৬৬ জন। ২০১৮ সালে তা কমে ৩ জনে দাঁড়িয়েছে। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা বন্ধের বিষয়ে বিজিবি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে এবং সরকার কূটনৈতিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সীমান্ত এ ধরনের হত্যাকে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে বিএসএফ একমত পোষন করে আসছে বলেও মন্ত্রী জানান।

প্রশ্নোত্তরের আগে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে বিকেল পাঁচটার পর সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

সরকারি দলের অসীম কুমার উকিলের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফ ঝুকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে যেসব স্থানে সমন্বিত টহলের মাধ্যমে সার্বক্ষনিক নজরদারির ব্যবস্থা করেছে। এক বিওপি (সীমান্ত ফাঁড়ি) থেকে পার্শ্ববর্তী বিওপির মধ্যবর্তীর দুরত্ব কমানোর জন্য ১২৮টি বর্ডার সেন্ট্রি পোষ্ট (বিএসপি) নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিএসএফ সীমান্তের ৩১৮ কিলোমিটার এলাকাকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করে সেখানে আধুনিক ক্যামেরাসহ নজরদারির ব্যবস্থা করছে।

এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারের নির্দেশনায় সুন্দরবন এলাকা হতে ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩২টি বাহিনীর প্রধানসহ ৩২৮ জন জলদস্যু ও বনদস্যু ৪৬২টি অস্ত্র এবং ২২ হাজার ৫০৪টি গোলাবারুদ ও বিপুল পরিমান অস্ত্রসহ র‌্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।

নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০০৬ সাল থেকে এ বছরের জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের সময় ১ হাজার ৫০ জন পুলিশ নিহত ও চার হাজার ৪৪০ জন আহত হয়েছেন।
বেগম লুৎফুন নেসা খানের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন জানান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের যে মই রয়েছে তার মাধ্যমে ২০ তলা পর্যন্ত আগুন নিভানো ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়।

বিএনপির হারুনুর রশীদের অপর প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সকল সংস্থা ২০১৮ সালে এক লাখ ৬১ হাজার ৩২৩ জন মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এক লাখ ১৯ হাজার ৮৭৮টি মামলা দায়ের করেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক কোনো ধরনের বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ড ঘটেনি।
এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, বর্তমানে ৮ হাজার ৮৪৮ জন বাংলাদেশী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জেলে বা ডিটেনশন সেন্টারে আটক রয়েছে। বিদেশের কারাগারে আটক বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যতম দায়িত্ব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দূতাবাসের সাহায্যে রুটিন মাফিক এ কাজ করে আসছে। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়া, তিউনেশিয়া, লিবিয়া ও ভানুয়াতু থেকে আটকে পড়া অনেক বাংলাদেশি দূতাবাসের সার্বিক প্রচেষ্টায় ফিরে এসেছে বা ফিরে আসার প্রক্রিয়ায় আছে।

নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, বাংলাদেশের শ্রমশক্তির পরিমাণ ৬ কোটি ৩৫ লাখ।