অর্ধকোটি টাকা নিয়ে উধাও

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ী বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এক ব্যক্তি উধাও হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২০ জুন থেকে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না।

ওই ব্যক্তির নাম এমদাদুল হক (৩৮)। তিনি কুড়িগ্রামের রাজিপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের শঙ্করপুর গ্রামের বাসিন্দা। এমদাদুল দেওয়ানগঞ্জের সানন্দবাড়ী বাজারের ব্যবসায়ী মো. লুৎফর রহমানের শ্যালক। নানা কৌশলে বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে তিনি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হন।

সানন্দবাড়ী বাজারের ভুক্তভোগী কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বাজারের ব্যবসায়ী লুৎফর রহমানের শ্যালক হিসেবে গত সাত-আট বছর আগে এমদাদুল এখানে আসেন। এমদাদুল খুব মিশুক ধরনের লোক ছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যে বাজারের বেশির ভাগ ব্যবসায়ীর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। দুই বছর আগে এমদাদুল বাজারে সততা স্টোর নামের একটি মনিহারি দোকানও দেন। এরপর বাজারের বেশির ভাগ ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক জোরালো হয়। সম্প্রতি তিনি নতুন বাজেটের আগে সিগারেটসহ নানা পণ্য মজুত রাখার কথা বলে বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। ৬০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত নেন। এরপর ১৯ জুন নিজের দোকানের হালখাতা শেষ করেন। পরদিন পরিবারসহ তিনি উধাও হয়ে যান। এরপর থেকে প্রায় ২০ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী নানা জায়গায় সন্ধান করেও তাঁকে পাননি। সানন্দবাড়ী বণিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এমদাদুলের বিরুদ্ধে থানায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আবদুল করিম আকন্দ বলেন, এমদাদুলকে বাজারের সবাই খুব বিশ্বাস করতেন। তাঁর লেনদেন খুব ভালো ছিল। সরল বিশ্বাসে তাঁকে টাকা দিয়ে ব্যবসায়ীরা খুবই বিপদে পড়েছেন। এমদাদুল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা নিয়ে গেছেন।

আবদুল করিমের দাবি, এর মধ্যে তাঁর কাছ থেকে ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, ব্যবসায়ী ফুল মিয়ার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা, এরশাদের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা, নুরুজ্জামান ব্যাপারীর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ও মো. শাহীনের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা এবং বাজারের নৈশপ্রহরী মোজাম্মেলের কাছ থেকে ৬০ হাজার হাতিয়ে নিয়েছেন এমদাদুল। এভাবে প্রায় ২০ জন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে এমদাদুলের ভগ্নিপতি সানন্দবাড়ী বাজারের ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এমদাদুল আমার শ্যালক ঠিক আছে, কিন্তু আমার কাছ থেকেও ১২ লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়েছে। সবার মতো আমিও ক্ষতিগ্রস্ত। এমদাদুল কোথায় আছে, আমার জানা নেই। তার সব ফোন নম্বর বন্ধ। সে বাড়িতেও যায়নি।’

সানন্দবাড়ী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. গাজিউর রহমান বলেন, এমদাদুল তাঁর কাছ থেকেও কিছু টাকা নিয়েছেন। কার কাছ থেকে কত টাকা নিয়েছেন, ব্যবসায়ীরা এখন পর্যন্ত বণিক সমিতির কাছে কোনো হিসাব জমা দেননি। তবে শোনা গেছে, ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এমদাদুল। বণিক সমিতি ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন সভাপতি।