শিশুর মাথা নিয়ে পালাতে গিয়ে গণপিটুনিতে যুবক নিহত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনায় ব্যাগে করে এক শিশুর ছিন্ন মাথা নিয়ে দৌড়ে পালানোর সময় এক যুবককে (২৮) পিটিয়ে হত্যা করেছে ক্ষুব্ধ জনতা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে শহরের নিউটাউন অনন্ত পুকুরপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শিশুটির নাম সজীব মিয়া (৭)। সে শহরের পূর্ব কাটলি এলাকায় রিকশাচালক রইছ উদ্দিনের ছেলে। তবে হত্যার শিকার যুবকের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

শিশুটির পরিবার, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অজ্ঞাত ওই যুবক আজ বেলা একটার দিকে শিশুটির মাথা একটি ব্যাগে করে নিয়ে শহরের চকপাড়া সুইপার কলোনিতে ঢোকেন। পরে তিনি সেখানে মদপান করতে চান। কলোনির লোকজন মদ বা এ জাতীয় কোনো নেশা নেই বলে জানালে ওই যুবক ক্ষেপে যান। এ সময় যুবকের হাতে থাকা ব্যাগটি রক্তমাখা দেখে লোকজন এর ভেতরে কী আছে তা জানতে চান। এতে করে ওই যুবক অসংলগ্ন কথা বললে তাদের সন্দেহ হয়। তখন কয়েকজন এগিয়ে এসে ব্যাগটি খুলে দেখতে চাইলে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয়রা তাঁকে ধাওয়া করে নিউটাউন অনন্ত পুকুরপাড়ে ধরে ফেলেন। এ সময় ব্যাগ তল্লাশি করে শিশুর দেহ বিচ্ছিন্ন মাথা দেখে বিক্ষুব্ধ জনতা পিটুনি দেয়। এতে একপর্যায়ে তিনি মারা যান।

খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্বিক) এস এম আশরাফুল আলম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহজাহান মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই যুবকের লাশ এবং শিশুর ছিন্ন মাথাটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জেলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে বেলা আড়াইটার দিকে সজীবের স্বজনেরা হাসপাতালে গিয়ে ছিন্ন মাথাটি সজীবের বলে শনাক্ত করে।

সজীবের বাবা রইছ মিয়া বলেন, আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে সজীব তাঁর কাছ থেকে পাঁচ টাকা নিয়ে স্থানীয় একটি দোকান থেকে খাওয়ার জিনিস কিনতে যায়। এর পর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না।

এদিকে আজ বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কাটলি এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের তিনতলার ছাদে সজীবের দেহের বাকি অংশ পাওয়া যায়। সজীবের বাসা থেকে ওই ভবনটির দূরত্ব প্রায় তিন শত গজের মতো। খবর পেয়ে পুলিশ দেহের বাকি অংশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

নেত্রকোনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাজমুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে। আমরা ফিঙ্গার প্রিন্ট পরীক্ষা করে নিহত যুবকের পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।’