হাতীবান্ধায় 'মানবতার দেয়াল'

এখানে কেউ নতুন বা পুরোনো কাপড় অন্যের জন্য রেখে যেতে পারেন। প্রয়োজন হলে তিনি অপর একটি কাপড় এখান থেকে নিয়েও যেতে পারবেন। হাতীবান্ধা, লালমনিরহাট, ২০ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো
এখানে কেউ নতুন বা পুরোনো কাপড় অন্যের জন্য রেখে যেতে পারেন। প্রয়োজন হলে তিনি অপর একটি কাপড় এখান থেকে নিয়েও যেতে পারবেন। হাতীবান্ধা, লালমনিরহাট, ২০ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো

‘আপনার প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যান, আপনার অপ্রয়োজনীয় জিনিস রেখে যান।’ এ হলো মানবতার দেয়ালের স্লোগান। দেয়াল বসানো হয়েছে কয়েকটি কাপড় টাঙানো হ্যাঙ্গার। সেখানে ঝুলছে বেশ কয়েকটি পোশাক। কয়েকজন সেখান থেকে তাঁদের প্রয়োজনীয় পোশাক সংগ্রহ করছেন, কেউ আবার তাঁর অব্যবহৃত পোশাকটি রেখে যাচ্ছেন। এভাবেই চলছে হাতীবন্ধার মানবতার দেয়াল।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের বড়খাতা বাজারের মহিলা মার্কেটের পাশে এই মানবতার দেয়াল তৈরি করা হয়েছে। এখান থেকে দরিদ্র, অসহায় মানুষেরা বিনা মূল্যে কাপড় নিতে পারবেন। এই কাজটি করেছেন স্থানীয় পাঁচ নারী।

বড়খাতা বাজারের পাশে শুক্রবার বিকেলে একটি ফেসবুক গ্রুপের উদ্যোগে এই মানবতার দেয়াল উদ্বোধন করা হয়। ‘আমাদের ইচ্ছে ঘুড়ি’ নামের ওই গ্রুপের পাঁচ নারী উদ্যোক্তা হলেন, নাহিদা আক্তার (৩৪), শাহ্ ঝুমু ৩২, আসমা আক্তার (৩২), ফাতিয়া নিশি (৩০), মারিয়া আলফাত (২৯)।

আমাদের ইচ্ছে ঘুড়ির সদস্যরা জানান, মানবতার দেয়ালের মাধ্যমে গরিব অসহায় মানুষ পোশাক নিতে পারবেন। আর সচ্ছল মানুষ এখানে নিজেদের পুরোনো বা নতুন কাপড় দিয়ে যেতে পারবেন। তাঁরা বলেন, এলাকা থেকে কাপড় না পেলে তাঁরা বিভিন্ন এলাকা থেকে কাপড় সংগ্রহ করে এই কর্মকাণ্ড সচল রাখবেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গেই শতাধিক পোশাক থেকে নিয়ে যান অসহায় নারী-পুরুষ। এর মধ্যে শিশুদেরও পোশাক ছিল।

উপজেলার বাসিন্দা ওসমান গণি মানবতার দেয়াল থেকে একটি পাঞ্জাবি নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নামাজ পড়ার জন্য আমার একটি পাঞ্জাবি খুব দরকার ছিল। এখান থেকে নিয়ে খুব ভালো লাগছে।’

বড়খাতা উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র এখান থেকে এক জোড়া জুতা নিয়েছে। খুশি হয়ে ওই ছাত্র প্রথম আলোকে বলে, ‘এখন থেকে জুতা পরে স্কুলে যেতে পারব।’

বড়খাতা বাজারের সমাজসেবক মো. আকতার হোসেন বলেন, ‘অনেকে লজ্জায় তার প্রয়োজনের কথা বলতে পারে না, তাদের জন্য এটা অনেক ভালো উদ্যোগ।’