ভোটাভুটিতে হবে নেতৃত্ব নির্বাচন

সিলেটে যুবলীগের সম্মেলনে নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে ভোটাভুটির মাধ্যমে। সম্মেলনের দিনক্ষণ নির্ধারণের সঙ্গে সঙ্গে ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচন করার বিষয়টি

চূড়ান্ত করেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ২৭ জুলাই মহানগর যুবলীগের সম্মেলনের পর জেলার সম্মেলন হবে২৯ জুলাই।

সিলেট নগরের কেন্দ্রস্থলের রেজিস্টারি মাঠে সম্মেলনের প্রথম পর্ব শেষে রিকাবীবাজারের কবি নজরুল মিলনায়তনে হবে কাউন্সিল অধিবেশন। সংগঠনের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী একাধিক হলে এ অধিবেশনে কাউন্সিলরা গোপন ব্যালটে ভোট দিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করবেন।

গত শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগরের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামীম আহমদ ও মহানগরের আহ্বায়ক আলম খানকে নিয়ে সম্মেলনস্থল রেজিস্টারি মাঠ পরিদর্শন করেন। ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবে চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টি তাঁরা জেলা ও মহানগরের সভাপতি সবাইকে অবহিত করেন। তাঁরা জানিয়েছেন, জেলা ও মহানগরের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতারা ব্যালট বাক্স নিয়ে আসবেন। মনোনীত কাউন্সিলররা নেতৃত্ব নির্বাচনে ঐকমত্য না হলে সরাসরি ভোট হবে।

যোগাযোগ করলে সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক আতিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংগঠনিক সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আমরা সিলেটে সম্মেলন করতে যাচ্ছি। সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকলে আমরা প্রথম অধিবেশনের পর দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিল করব। দুই পদে গোপন ব্যালটে ভোটাভুটি হবে।’

১৯৯২ সালের পর জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয় ২০০৩ সালে। তবে সেখানে আর ভোট হয়নি। সমঝোতার ভিত্তিতে ওই সম্মেলনে জগদীশ চন্দ্র দাসকে সভাপতি ও আজাদুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়। তিন বছর মেয়াদি এ কমিটি আর সম্মেলন করতে পারেনি। ২০০৮ সালে এক-এগারোর পরিবর্তিত রাজনৈতিক অবস্থায় জগদীশ ও আজাদুর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার সময় দলীয় পদ ত্যাগ করেন। তখন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু তাহের কারাবন্দী হলে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে থাকা শামীম আহমদ নেতৃত্বের হাল ধরেন। তিনি প্রায় ১১ বছর ধরে এ পদে আছেন।

অন্যদিকে মহানগর যুবলীগে সম্মেলন হয়েছিল ২০০৫ সালে। সৈয়দ শামীম আহমদ ও আবদুর রহমানের নেতৃত্বাধীন কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলে ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয়ভাবে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আলম খানকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে সম্মেলন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু পাঁচ বছরেও মহানগর সম্মেলন হয়নি।

সম্মেলন প্রস্তুতিতে থাকা যুবলীগের কেন্দ্রীয় সূত্র জানায়, মহানগরের সম্মেলনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনে কাউন্সিলরা ভোট দেবেন। নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে ১৫ জন করে কাউন্সিলর ভোটার হিসেবে গণ্য হবেন। অন্যদিকে জেলায় বিভিন্ন উপজেলা কমিটিতে ২৮৩ জন কাউন্সিলর তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

১৯৯২ সালে সিলেট যুবলীগের সম্মেলনে প্রথমবারের মতো ভোটাভুটির মাধ্যমে গোলাম রব্বানী সভাপতি ও বিজিত চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিজিত চৌধুরী বর্তমানে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যখন ভোটে নির্বাচিত হই, তখন তৃণমূল আমাদের নিয়ে অন্য রকম এক উচ্ছ্বাসে মেতেছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই ধারা বজায় থাকেনি বলে ভোটে নির্বাচিত হওয়ার স্বাদ যুব নেতৃত্ব আর পায়নি।’ এ ধারা অন্যান্য সহযোগী সংগঠনে বিস্তৃতি পেলে তৃণমূলের কাছে গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।

জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামীম আহমদ ও মহানগরের আহ্বায়ক আলম খান দুজনই সভাপতি পদে প্রার্থী হবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী আাছেন আরও অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী। শামীম বলেন, ‘দীর্ঘ ১১ বছর কঠিন সময়ে যুবলীগের হাল ধরে রাখার মূল্যায়ন হিসেবে আমি সভাপতি নির্বাচিত হব বলে মনে করছি।’ আলম খান বলেন, ‘যুবলীগকে আদর্শিক সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস ছিল আমার। বিগত দিনে মহানগর যুবলীগ নিয়ে কোনো ধরনের বদনাম ছিল না। এ চেষ্টায় সফল বলে আমি কাউন্সিলরদের ভোটপ্রত্যাশী।’