২৯ জুলাই রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশ

বিএনপ
বিএনপ

খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রাজশাহীতে ২৯ জুলাই মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। তারা এবার সমাবেশ রাজপথে করার ঘোষণা দিয়েছে। 

গত নভেম্বরের বিএনপিকে বাধ্য হয়ে মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশ করতে হয়েছিল। এবার তারা রাজপথের তিনটি জায়গার যেকোনো একটিতে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। নগরের একটি রেস্তোরাঁয় এ উপলক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক মতবিনিময় সভা শেষে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু সংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন মহাসমাবেশের সমন্বয়ক ও রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত। এবারের সমাবেশে রাজশাহী বিভাগের আটটি জেলা, রাজশাহী মহানগর ইউনিটসহ মোট ৯টি সাংগঠনিক ইউনিটের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। শুধু বিএনপিই এই সমাবেশ ডেকেছে, এতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থাকছে না। 

মিজানুর রহমান বলেন, রাজশাহী আজ যা চিন্তা করে, বাংলাদেশ তা পরের দিনে ভাবে। তাই দলকে গতিশীল করতে রাজশাহীর মহাসমাবেশকে আরও গতিশীল করতে হবে। যেকোনো মূল্যেই রাজশাহীর রাজপথেই এবার সমাবেশ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ২৯ জুলাই বেলা দুইটা থেকে এ সমাবেশ শুরু হবে। নগরের জিরোপয়েন্ট, মনিচত্বর এবং গণকপাড়ার যেকোনো একটি জায়গায় এটি হবে। মাদ্রাসা মাঠে বৃষ্টির কারণে সমাবেশ করা যাবে না। এ জন্য তাঁরা রাজপথে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যেকোনো মূল্যেই এটি সফল করা হবে। বৃষ্টিতে ভিজে হলেও নেতা-কর্মীদের এই মহাসমাবেশ সফল করার আহ্বান জানান তিনি। 

রাজপথে সমাবেশ করা হলে জনদুর্ভোগ হবে কি না, জানতে চাইলে মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগ, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদসহ অন্যান্য দল রাজপথেই সমাবেশ করে। তারা করলে যদি জনদুর্ভোগ না হয়, তাহলে বিএনপি করলেও হবে না। 

রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, তাঁরা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত উপপুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন জমা দিয়ে এসেছেন।

মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক বলেন, গত সমাবেশের সময় তাঁদের নেতা-কর্মীদের পথে পথে বাধার সৃষ্টি করা হয়েছিল। এবার আগে থেকে তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন যাতে তাঁদের বাধা নেওয়া না হয়। তিনি বলেন, এবার যেখানে বাধা দেওয়া হবে সেখানেই সমাবেশ করা হবে। এ জন্য তিনি নেতা-কর্মীদের হ্যান্ডমাইক সঙ্গে করে নিয়ে আসতে বলেন। 

সাবেক সাংসদ ও রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা বলেন, ‘আমাদের ঢাকায় বেশি বেশি সমাবেশ করতে হবে। ঢাকায় বিএনপির কোনো গতি নেই। যার জন্য সরকার মনে করছে বিএনপি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এ জন্য আমাদের ঢাকা জেলাতে আরও বেশি করে সমাবেশ বাড়ানোর দরকার।’ 

প্রস্তুতিমূলক এ সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান, হেলালুজ্জামান তালুকদার ও কামরুল মনির, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান প্রমুখ। এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

গত নভেম্বরে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সড়কের ওই তিন স্থানে সমাবেশ করা জন্য আবেদন করেছিল। তখন পুলিশ অনুমতি দেয়নি। এ জন্য কয়েক দফা সমাবেশের তারিখ পরিবর্তন করতে হয়। শেষ পর্যন্ত ৯ নভেম্বর রাজশাহী মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশের মাত্র ১৪ ঘণ্টা আগে ১২টি শর্তে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এবারও রাজপথে সমাবেশের জন্য বিএনপিকে অনুমতি দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী উপকমিশনার (এডিসি) রুহুল কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।