দত্তক শিশুকে দত্তক দিয়ে নাটক, আটক ১

নরসিংদীর পলাশে সাড়ে তিন বছর বয়সী এক শিশুকে হারানোর নাটক সাজিয়ে তার দত্তক মা, নানা ও নানি বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় পুলিশ শিশুটির দত্তক নানিকে আটক করেছে। মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ।

আটক নারীর নাম রানু বেগম (৫২)। সংশ্লিষ্ট শিশুর নাম তাওহিদ। পুলিশ জানিয়েছে, তাওহিদ গাজিপুরের কালিগঞ্জ উপজেলার জামালপুর গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক আলাউদ্দিনের ছেলে। তিন মাস আগে আলাউদ্দিনের পরিবার তাওহিদকে রানু বেগমের মেয়ে রেক্সনার কাছে দত্তক দেন। রেক্সনাদের বাড়ি নরসিংদী উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার বালুচর পাড়া গ্রামে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, রেক্সনা দম্পতি নিঃসন্তান। কয়েক দিন আগে তাওহিদকে নিজের মা-বাবার কাছে রেখে শরীয়তপুর যান রেক্সনা। পরে গত রোববার সন্ধ্যায় রেক্সনার বাবা নান্নু মিয়া ‘তাওহিদকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না’ মর্মে পলাশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরদিন তাওহিদের সন্ধান চেয়ে এলাকাজুড়ে মাইকিংও করানো হয়।

পলাশ থানার উপপরিদর্শক সুমন মিয়া জানান, ঘটনার তদন্তে নেমে রেক্সনার মা রানু বেগমকে সন্দেহ হয়। পরে তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এতে তিনি জানান, ১২ হাজার টাকার বিনিময়ে তাঁরা গাজীপুরের কাপাসিয়ার দক্ষিণ গাও গ্রামের এক নিঃসন্তান পরিবারের কাছে তাওহিদকে ‘দত্তক’ দিয়েছেন।

থানায় আটক থাকা রানু বেগম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, তাঁর মেয়ে রেক্সনার স্বামী বিদেশে থাকেন। এর আগেও একটি সন্তান দত্তক নিয়েছিল এই দম্পতি। কিন্তু ওই শিশুটি মানসিক প্রতিবন্ধী। এ নিয়ে রেক্সনা ও তাঁর স্বামীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। নতুন করে তাওহিদ দত্তক নেওয়ায় স্বামী আরও ক্ষেপে গেছেন বলে রেক্সনা তাঁর মাকে জানান। তাই তাঁরা তাওহিদকে কাপাসিয়ার ওই নিঃসন্তান পরিবারের কাছে দত্তক দেন। এক প্রশ্নের জবাবে রানু বেগম দাবি করেন, তাঁরা শিশুটিকে বিক্রির জন্য ওই ১২ হাজার টাকা নেননি। গত তিন মাসে তওহিদের লালন-পালন বাবদ এই টাকা ওই দম্পতি নিজ থেকে দিয়েছে।

উপপরিদর্শক সুমন মিয়া বলেন, রানু বেগমসহ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি আরও বিস্তারিত ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে তাঁরা জানতে পেরেছেন, তাওহিদ হারিয়ে গেছে—এমন নাটক রানু বেগমের পরিবারের সব সদস্যের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হয়েছে।