সবার জন্য পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিতে তরুণদের প্ল্যাটফর্ম

ইয়ুথ ফর এসডিজি-৬ প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো
ইয়ুথ ফর এসডিজি-৬ প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো

জাতিসংঘের ঘোষণা করা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-৬ এর প্রতিপাদ্য, সকলের জন্য পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্য অর্জন করতে হবে ২০৩০ সালের মধ্যে। লক্ষ্য অর্জন কঠিন, কিন্তু অসাধ্য না। কারণ পানি ও স্যানিটেশনে বাংলাদেশের বড় বড় অর্জন আছে। তবে দেশের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ তরুণকে বাদ দিয়ে এমন অর্জন কী সম্ভব?

পানি নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়াটার এইড মনে করছে, এ কাজে তরুণদের সম্পৃক্ত করা জরুরি। তাই নিরাপদ পান, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) খাতে নতুন মাত্রা যোগ করতে ও নতুনদের মাধ্যমে নেতৃত্ব গড়তে ইয়ুথ ফর এসডিজি-৬ প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন হলো। উদ্বোধনের সময় ওয়াটার এইডের বাংলাদেশিয় প্রধান খায়রুল ইসলাম পরিষ্কার করলেন এর উদ্দেশ্য। বললেন, ‘কোনো প্রকল্প নয়, নির্দিষ্ট মেয়াদ নয়—তরু নদের স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বেচ্ছামূলক অংশগ্রহণের জন্যই এই প্ল্যাটফর্ম। আমরা শুধু এর গঠনে সহায়তা করেছি।’

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে এই প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন হলো। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা তরুণদের উপস্থিতিই ছিল আজ বেশি। ছিলেন সরকার, বেসরকারি সংগঠন, করপোরেট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। পানি ও স্যানিটেশনের মতো জীবনের অপরিহার্য উপাদানের নিশ্চিত করতে সব বক্তাই তারুণ্যের অমিত শক্তির সহায়তার কথা বললেন।

আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে স্যানিটেশনের প্রতিষ্ঠিত কোনো নেটওয়ার্ক নেই। ঢাকারই যদি এই অবস্থা হয়, অন্যান্য শহরের অবস্থা সহজেই অনুমেয়।’ তবে সরকারি এই পদস্থ কর্মকর্তা বললেন, ২০৩০ সালের সবার জন্য পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে সরকার। আর এ কাজে আমরা সফল হব।
নতুন এই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন জহিরুল ইসলাম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ওয়াটার এইডের বাংলাদেশিয় প্রধান খায়রুল ইসলাম। ছবি: প্রথম আলো
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ওয়াটার এইডের বাংলাদেশিয় প্রধান খায়রুল ইসলাম। ছবি: প্রথম আলো

এ সফলতা অর্জনের জন্য সওয়ারি যে তরুণদের করতে হবে, তা মনে করেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ও বিজিএমইএয়ের সভাপতি রুবানা হক। তিনি বলেন, ‘হাত ধোয়া বা পরিশোধন জরুরি। তবে এর চেয়ে বেশি জরুরি অন্তরের পরিশোধন।’ রুবানা হক তরুণদের আরও সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এসডিজি বিষয়ক) মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ে অকুতোভয় তরুণেরাই ছিলেন প্রাণ। দেশের কোনো অর্জনই তরুণদের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব না।

ওয়াটার এইডের খায়রুল ইসলাম বলেন, পাঁচ থেকে ১০ জনের তরুণদের দল যদি পাঁচ থেকে ১০টি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায় এবং সেখানেও গিয়ে নতুন নতুন সদস্যদের পানি ও স্যানিটেশন নিয়ে সচেতনতার আন্দোলনের সম্পৃক্ত করতে পারে তবে আজ থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে ১০ হাজার বা এর বেশি তরুণ এ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হবে। এসব তরুণ তখন বড় শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
আজ তরুণদের পক্ষ থেকে কথা বলেন প্রমি খীসা।
এই প্ল্যাটফর্মের এক পরামর্শক কমিটি আছে। আজ কমিটির সদস্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বুয়েটের অধ্যাপক তানভীর আহমেদ, লেখক সুমন রহমান, ইউনিলিভারের কর্মকর্তা শামীমা আখতার প্রমুখ।