বিদেশে বসে স্বামীকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন স্ত্রী

রাজশাহীতে হত্যা পরিকল্পনায় যুক্ত থাকার সন্দেহে চার যুবককে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাতে তাঁদের আটক করা হয়। পুলিশ বলছে, পরকীয়ার কারণে প্রবাসে বসে এক নারী তাঁর প্রেমিকের সহায়তায় স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। ওই পরিকল্পনায় আটক চারজন যুক্ত ছিলেন।

ওই নারীর বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর স্বামীর নাম কাঞ্চু শিকদার‍ ওরফে কাঞ্চন। কাঞ্চনের বাড়িও বাগেরহাটে। একই এলাকার রাসেল শেখের (২৪) সঙ্গে মেয়েটির পরকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে।

রাসেলের সঙ্গে আটক বাকি তিনজন হলেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন গ্রামের মো. সজীব (১৯), নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আলীগঞ্জ এলাকার মিরাজ হোসেন (১৯) ও পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার নলুয়াবাগি গ্রামের মো. কাওসার (২০)। এই তিন যুবক মেয়েটির পরকীয়া প্রেমিক রাসেলের বন্ধু।

তাঁদের আটকের পর রোববার দুপুরে রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল্লাহ নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন, রাসেলের সঙ্গে কাঞ্চনের স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। তাই তাঁরা কাঞ্চনকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। রাজশাহীতে এনে কাঞ্চনের গলা কেটে হত্যার পর ঘটনাটি ছেলেধরা চক্রের কাজ বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তাঁরা। পরিকল্পনামতো রাসেল তিন বন্ধুর সহায়তায় কাঞ্চনকে রাজশাহীতে আনেন। তবে সেখানে আসার পর পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

এসপি বলেন, শনিবার দিবাগত রাত আটটার দিকে কাঞ্চনকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বাসুদেবপুর ফুলতলা বাজারে নিয়ে যান মিরাজ ও কাওসার। তবে সেখানে কাঞ্চনের মনে সন্দেহ জাগে। তাই তখন তিনি চিৎকার করতে করতে দৌড় দেন। এ সময় বাজারের লোকজন মিরাজ ও কাওসারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। পুলিশ তাঁদের কাছ থেকে ছুরি ও চেতনানাশক ওষুধ জব্দ করেছে। থানায় নেওয়ার পর পুলিশের জেরার মুখে আটক দুজন হত্যার পরিকল্পনার কথা জানান। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে রাসেল ও সজীবকে আটক করা হয়।

পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, কাঞ্চনকে হত্যার পরিকল্পনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আটক চারজনের মধ্যে মুঠোফোনের খুদেবার্তায় আলাপ হয়েছিল। সৌদিপ্রবাসী মেয়েটি তাঁর স্বামীকে হত্যার জন্য ২০ হাজার টাকাও পাঠিয়েছিলেন। তবে সাধারণ মানুষের কারণে কাঞ্চন প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।

রাজশাহীর চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর কাঞ্চন ভয়ে বাগেরহাটে পালিয়ে গেছেন। তাঁকে ডাকা হয়েছে। তাঁর আসতে দেরি হওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকেই আটক চারজন ও প্রবাসী মেয়েটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কাল সোমবার সকালে ওই চার যুবককে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।