মানব পাচার মামলা ৪৬৬৮, নিষ্পত্তি মাত্র ২৪৫
মানবপাচারের মামলা নিষ্পত্তি হতে দীর্ঘ সময় লাগছে। এখন পর্যন্ত এ সংক্রান্ত আইনে ৪ হাজার ৬৬৮টি মামলা হয়েছে। কিন্তু নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ২৪৫টি মামলা। মামলায় দীর্ঘসূত্রতার জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন না করাকে দায়ী করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ২০১২ সালে জারি হওয়া মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান থাকলেও সাত বছরে তা করা হয়নি।
মানব পাচার ও অনিয়মিত অভিবাসন পরিস্থিতি, সমস্যার কারণ এবং উত্তরণের পথ নিয়ে আজ সোমবার সকালে রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়। বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচি।
২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এক প্রস্তাবের মাধ্যমে প্রতি বছর ৩০ জুলাই দিনটিকে বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বলেন, মানব পাচার প্রতিরোধ আইনটি পর্যালোচনা করে দেখবে মানবাধিকার কমিশন। এটি কেন কার্যকর হচ্ছে না, তা খতিয়ে দেখে সরকারকে জানানো হবে।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচি জানিয়েছে, চলতি বছরের মে মাসে ভূমধ্যসাগর দিয়ে অনিয়মিতভাবে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকা ডুবে মারা যান ৩৭ বাংলাদেশি। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মাত্র এক মাসের মধ্যে ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে ভাসতে থাকা ৬৪জন বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে তিউনিসিয়ার উপকূল থেকে উদ্ধার করা হয়। ইউরোপে এভাবে যাওয়ার চেষ্টা নতুন নয়। শুধু ইউরোপ নয়, বছর চারেক আগে সাগরপথ দিয়ে হাজারো মানুষের মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে যাওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যমে উঠে আসে। বাংলাদেশ যখন মধ্যম আয়ের দেশের দিকে যাচ্ছে এবং নিরাপদ অভিবাসন প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে, তখন এমন সব চিত্র অনেক বেশি উদ্বেগের।
অনুষ্ঠানের মূল নিবন্ধে ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবপাচার বিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে টানা তৃতীয়বারের মতো টায়ার-২ ওয়াচ লিস্টে রাখা হয়েছে। ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফের গত বছরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর ভারতে বাংলাদেশ থেকে গড়ে ৫০ হাজার নারী পাচার হয়। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশ থেকে মানবপাচারের ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবু বকর সিদ্দিক, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. শাহ আলম প্রমুখ। সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন ব্র্যাকের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ।