ওয়াসার পানি পরীক্ষায় কমিটির মতামত চেয়েছেন হাইকোর্ট

রাজধানীর মিরপুর ও পাতলা খান লেনের পানির নমুনা আইসিডিডিআরবি ও বুয়েটের পরীক্ষার ফলাফলে ফিকেল কলিফর্ম ও ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়নি বলে আদালতকে জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার আইনজীবী। যদিও ঢাকা ওয়াসার পানির নমুনা পরীক্ষায় চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটির প্রতিবেদনে ওই দুই স্থানে কলিফর্ম ও ইকোলাইয়ের উপস্থিতির কথা এসেছে।

বিষয়টিকে উচ্চমাত্রার প্রযুক্তিগত অভিহিত করে হাইকোর্ট ঢাকা ওয়াসার পরীক্ষার প্রতিবেদন চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটির কাছে পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছেন। কমিটিকে এই প্রতিবেদনের ওপর আগামী ২৩ অক্টোবরের মধ্যে মতামত দিতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ২৩ অক্টোবর।

শুনানিকালে আদালত বলেছেন, ‘ওয়াসার কাজ সুপেয় বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করা, যা চলমান প্রক্রিয়া।’

এর আগে আদালতের আদেশ অনুসারে গঠিত চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটি বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আইসিডিডিআরবির পরীক্ষাগারে পানির নমুনা পরীক্ষা করে এক প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনটি ৭ জুলাই আদালতে দাখিল করা হয়।

প্রতিবেদনের ভাষ্য, উৎসসহ ঢাকা ওয়াসার বিভিন্ন জোন থেকে সংগৃহীত পানির ৩৪টি নমুনার মধ্যে আটটিতে ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ পাওয়া গেছে। এই দূষণ রোধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলেও কমিটির সুপারিশে বলা হয়। সেদিন শুনানি নিয়ে আদালত এই প্রতিবেদনের বিষয়ে হলফনামা আকারে বক্তব্য ওয়াসাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে ২৪ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। ধার্য তারিখে ওয়াসার আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ৩০ জুলাই শুনানির দিন ধার্য করেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ ওয়াসার আইনজীবী এ এম মাছুম আদালতে ওই দুই স্থানের (মিরপুর ও পাতলা খান লেন) পানি পরীক্ষার ফলাফল ও তাদের কার্যক্রম তুলে ধরেন।

রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ।

এর আগে গত বছরের ১২ অক্টোবর ‘অনিরাপদ পানি পান করছে সাড়ে সাত কোটি মানুষ’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে একই বছরের ১৪ অক্টোবর রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৬ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন এবং ওয়াসার পানির মান পরীক্ষায় চার সদস্যের কমিটি গঠন করতে বলেন। এরপর গত ১৮ এপ্রিল স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

চার সদস্যের কমিটি তিন দফা সুপারিশ করেছে। এতে বলা হয়, নিরীক্ষায় শনাক্ত হওয়া সরবরাহকৃত এলাকায় ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ রোধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের এখনই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সমস্যাপ্রবণ এলাকায় সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিবারে বা খানায় পানির মান সার্বিক পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সব পরিবারে বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।