ঝড়ে লন্ডভন্ড স্কুল, ১৭ দিন ধরে পাঠদান বন্ধ

ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে পঞ্চগড়ের এই স্কুলটি। ফলে ১৭ দিন ধরে বন্ধ আছে পাঠদান। আটোয়ারী, পঞ্চগড়। ছবি: প্রথম আলো
ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে পঞ্চগড়ের এই স্কুলটি। ফলে ১৭ দিন ধরে বন্ধ আছে পাঠদান। আটোয়ারী, পঞ্চগড়। ছবি: প্রথম আলো

পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার ডাংগীরহাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ঝড়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ১৭ দিন ধরে পাঠদান বন্ধ আছে। ঝড়ে স্কুলটির টিনের চাল উড়ে যাওয়ায় ও শ্রেণিকক্ষগুলোতে টিন-কাঠ পড়ে থাকায় পাঠদান বন্ধ আছে। এতে করে স্কুলের আসন্ন জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীরা শঙ্কায় আছে।

সম্প্রতি স্কুলটিতে গিয়ে দেখা যায়, গত ১৩ জুলাই হয়ে যাওয়া ঝড়ে স্কুলের নয় কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটির টিনের চালা প্রায় পুরোটাই উড়ে গেছে। শ্রেণিকক্ষগুলোতে টিনের টুকরো, কাঠের টুকরো বিশৃঙ্খলভাবে পড়ে আছে। পাশের গাছপালা ভেঙে স্কুলের দেয়ালের ওপর পড়ায় দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির পানিতে নয়টি কক্ষের প্রায় ৮০ জোড়া বেঞ্চের অবস্থাও নাজুক হয়ে পড়েছে। পাঠদানের পরিবেশ না থাকায় স্কুলে শিক্ষার্থীর উপস্থিতিও কমে যাচ্ছে।

এ ছাড়া ঝড়ের কবলে পড়ে স্কুলের কম্পিউটার কক্ষে থাকা তিনটি কম্পিউটারও নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হওয়ায় মাঠেও পাঠদান করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্কুলের শিক্ষকেরা।

স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফরোজা আক্তার বলে, ‘আগামী নভেম্বর মাসে জেএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। ১৭ দিন ধরে আমাদের কোনো ক্লাস হয় না। কবে ক্লাস শুরু হবে তাও জানা নেই। এই সময় ক্লাস না হলে আমরা পিছিয়ে পড়ব।’

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শান্ত চন্দ্র বর্মন বলে, ‘এসএসসি পরীক্ষার আর মাত্র ছয় মাস বাকি। এ সময় নিয়মিত ক্লাসের পাশাপাশি অন্যান্য বিদ্যালয়গুলোতে অতিরিক্ত ক্লাস হচ্ছে। কিন্তু আমরা নিয়মিত ক্লাসই করতে পারছি না। এতে করে আমরা ক্ষতির মুখে পড়ছি।’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘গত ১৩ জুলাই (শনিবার) রাত ১১টার দিকে ঝড়ের সময় আমাদের একাডেমিক ভবনের বারান্দাসহ টিনের চালা সম্পূর্ণ উড়ে গেছে। টিনের নিচে দেওয়া কাঠগুলো ভেঙে পড়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে সাড়ে সাত বান্ডিল টিন এবং ২২ হাজার ৫০০ টাকা অনুদান পেয়েছি। তবে এটি সংস্কার কাজের জন্য অত্যন্ত অপ্রতুল। যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে ৪০ বান্ডিল টিন এবং প্রায় তিন লাখ টাকা হলে বিদ্যালয়টি পাঠদানের উপযোগী করে তোলা যাবে।’

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘ঝড়ের পর আমি ওই বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। জেলা প্রশাসনের ত্রাণ তহবিল থেকে ইতিমধ্যে স্কুলটির জন্য সাড়ে সাত বান্ডিল টিন এবং ২২ হাজার ৫০০ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যালয়টিকে পাঠদানের উপযোগী করে তোলার চেষ্টা করছি আমরা।’

গত ১৩ জুলাই মাত্র আধ ঘণ্টার ঝড়ে পঞ্চগড় সদর, আটোয়ারী ও বোদা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। ওই সময় জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে এবং খুঁটি ভেঙে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঝড়ে তিনটি উপজেলার অনেক বাড়িঘর ভেঙে পড়ে।