জমি নিয়ে বিরোধে হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে এক ব্যক্তির দুই হাত ও দুই পায়ের রগ কেটে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার দক্ষিণ সোনাবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ পাঁচ নারীকে আটক করেছে।

নিহত ব্যক্তির নাম আলফাজ আলী গাজী (৩০)। তাঁর বাড়ি কলারোয়া উপজেলার দক্ষিণ সোনাবাড়িয়া গ্রামে। তিনি ট্রলিচালক ছিলেন।

নিহত আলফাজের চাচাতো ভাই কামরুজ্জামান গাজী জানান, ২০১৩ সাল থেকে তাঁদের চাচাতো চাচাদের সঙ্গে পাঁচ বিঘা জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে একাধিকবার তাঁদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।


নিহত আলফাজের স্ত্রী শারমিন খাতুনের তথ্যমতে, গতকাল বিকেলে সোনাবাড়িয়া বাজারে তাঁর স্বামী আলফাজের সঙ্গে ওই বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয় প্রতিপক্ষ গণি গাজী, ইসমাইল গাজী, ফয়সাল গাজী ও নাজমুলের। এর জের ধরে রাত নয়টার দিকে বাড়িতে এসে আলফাজের ওপর হামলা চালানো হয়। ওই সময় আলফাজ ঘরের বারান্দায় বসে ছিলেন। এ সময় গণি, ফয়সাল, নাজমুল, ইসমাইলসহ ১০ থেকে ১২ জন বাড়িতে এসে হামলা চালান আলফাজের ওপর। আলফাজ পালানোর চেষ্টা করলে তাঁকে ধরে বারান্দা থেকে নিচে নামিয়ে দুই হাত ও দুই পা কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে চলে যান হামলাকারীরা। ঘটনার পরপরই পরিবারের অন্য সদস্যরা আলফাজকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রাত ১২টার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাহাবুবর রহমান তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে জানতে গতকাল রাত সাড়ে ১২টায় ও আজ বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে দুই দফায় ইসমাইল গাজীর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। ঘরে তালা দিয়ে রাতেই বাড়ির অন্য সদস্যরা পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহবুবুর রহমান বলেন, আলফাজকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসার আগেই তিনি মারা যান। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তিনি।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনীর-উল-গীয়াস জানান, চাচাদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আলফাজকে হত্যা করা হয়েছে। আগে থেকেই দুই পক্ষের থানায় ও আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলা রয়েছে। এই ঘটনায় গণি গাজীর মা মালেকা খাতুন, স্ত্রী বিউটি সুলতানাসহ পাঁচ নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য আজ বুধবার সকাল নয়টায় দিকে লাশ সদর সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।