ওয়ার্ডবয় মান্নান হত্যায় গ্রেপ্তার টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ

নিহত আবদুল মান্নান। ছবি: সংগৃহীত
নিহত আবদুল মান্নান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্ডবয় আবদুল মান্নান (২৪) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুই ছাত্রকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। আতিকুল আলম (২৬) ও এ এইচ এম ফুয়াদ হাসান (২৪) নামের এই দুই শিক্ষার্থী এখন তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা-পুলিশ হেফাজতে। গ্রেপ্তার অপর এক ছাত্র আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া শিক্ষার্থীর নাম জান্নাতুল নাইম। তিনি গত বৃহস্পতিবার মান্নান হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। নাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আজিজ হলের ৩১৭ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

গত ৩০ জুলাই দিবাগত রাতে ওয়ার্ডবয় আবদুল মান্নানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আজিজ হলে পিটিয়ে জখম করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাইপো মাসুদ রানা বাদী হয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আট ছাত্রের নাম উল্লেখ করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় হত্যা মামলা করেন। মাসুদকেও ওই দিন পেটানো হয়েছিল।

মামলায় মাসুদ রানা বলেন, তাঁর চাচা আবদুল মান্নান বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আজিজ হলে ওয়ার্ড বয় হিসেবে খাবার পরিবেশন করতেন। খাবার পরিবেশনকে কেন্দ্র করে ওই হলের ছাত্র আতিক, ফুয়াদ, নাঈম ও আদিলের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। গত ৩০ জুলাই মোবাইল চুরির নাটক সাজিয়ে মান্নানকে ওই হলের ৩১৮ নম্বর কক্ষে ডেকে নেয় আসামি আতিক। পরে তাঁর হাত-পা বেঁধে ফেলে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। হলের ছাত্র ফুয়াদ, নাঈম, আদিলসহ আরও কয়েকজন মান্নানকে হাতুড়ি, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন, মাথা ফাটিয়ে দেন। এরপর মান্নান অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

মামলার বাদী মাসুদ রানা আরও বলেন, সেদিন তাঁকেও ডেকে নিয়ে আসামিরা পিটিয়ে জখম করে। তাঁর আরেক সহকর্মী আকবরের মাথা ফাটিয়ে দেয় আসামিরা। গুরুতর জখম মান্নান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে বলেন, চোর সন্দেহে ওয়ার্ড বয় আবদুল মান্নানকে টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আতিকসহ কয়েকজন পিটিয়ে জখম করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল মান্নান হত্যায় গ্রেপ্তার দুই আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

নিহত আবদুল মান্নানের বড় ভাই আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, বিনা অপরাধে তাঁর ভাই মান্নানকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র। গত বৃহস্পতিবার অজ্ঞাত একজন তাঁকে মোবাইল করে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকিও দেন। মান্নান হত্যায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার দাবি জানিয়ে আলমগীর বলেন, সব আসামির ফাঁসি চান তিনি।