দুই কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে পাঁচজনের যাবজ্জীবন

0
0

ফরিদপুরে দুই কিশোরীকে অপহরণ ও গণধর্ষণের দায়ে পাঁচ তরুণকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেককে আরও তিন বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের হাকিম মো. আলমগীর কবীর আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে এ রায় দেন।

সাজা পাওয়া আসামিরা হলেন উজ্জ্বল খান (২৫), শুকুর আলী (২৬), মিরাজ শেখ (২৫), ইলিয়াস ব্যাপারী (২০) ও শফি মোল্লা (২৫)। তাঁরা সবাই ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার বাসিন্দা।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, এ মামলার আসামিরা বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হন। পরে তাঁরা সবাই জামিন পান। মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলাকাল পর্যন্ত আসামিরা নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতেন। তবে সাক্ষ্য পর্ব শেষ হওয়ার পর যুক্তিতর্ক পর্ব শুরু হলে আসামিরা সবাই আত্মগোপন করেন। এ কারণে তাঁদের অনুপস্থিতিতে আজ এ রায় ঘোষণা করা হয়।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকার পক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) স্বপন পাল মামলার নথির বরাত দিয়ে বলেন, ২০১৬ সালের ১৪ এপ্রিলে চরভদ্রাসন উপজেলার স্কুল পড়ুয়া ১৪ ও ১৫ বছর বয়সী দুই কিশোরীকে আসামিরা অপহরণ করেন। এরপর পদ্মার চরের একটি ভুট্টাখেতে নিয়ে গণধর্ষণ করেন। ওই দৃশ্য মুঠোফোনে ভিডিও করেন তাঁরা। পরে কিশোরীর পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ওই পাঁচ আসামি। চাঁদার টাকা না পেয়ে তাঁরা ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এ ঘটনায় এক কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে ২০১৬ সালের ১১ জুন ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। তদন্ত শেষে পাঁচ তরুণকে আসামি করে ২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পেশকার সাফায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণ, ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ আনা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগটি আমলে নিয়ে বিচারকাজ পরিচালনা করেন। অপর দিকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগটির বিচারকাজ ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করা হয়। ওই অভিযোগে একই আসামিদের বিচার কার্যক্রম চলছে।