দিনাজপুরে ডেঙ্গুতে এক কিশোরের মৃত্যু

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এবার দিনাজপুরে রবিউল ইসলাম (১৭) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটায় দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

রবিউলের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ এলাকায়। বাবার নাম নয়ন ইসলাম। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আট দিন ধরে এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল সে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ জুলাই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হয় রবিউল ইসলাম। ভর্তি হওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় কিছুটা সুস্থ হয় সে। কিন্তু গতকাল থেকে আবার তার গায়ে জ্বর বাড়তে থাকে। আজ ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।

রবিউল ইসলামের পাশের বেডে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত আরেক রোগী মো. আদর ইসলাম (২৩) বলেন, ‘আমরা দুজনই একই দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। ও কিছুটা সুস্থও হয়েছিল। কিন্তু গতকাল থেকে তার জ্বর বাড়তে থাকে। মারা যাওয়ার রাতে খুব ছটফট করেছে সে। তার শ্বাস–প্রশ্বাসের কষ্ট হচ্ছিল। কারিয়ানা পড়ার জন্য কয়েক মাস পূর্বে ঢাকার কোনো এক মাদ্রাসায় ভর্তি হতে গিয়েছিল রবিউল। সেখানেই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রথমে বাড়িতে আসে। পরের দিনই জ্বর বেশি হওয়ার কারণে ডেঙ্গু পরীক্ষা করে। ডেঙ্গু ভাইরাস ধরা পড়লে মেডিকেলে ভর্তি হয় সে।’

দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসক খায়রুল কবির জানান, ‘রবিউল ইসলাম কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু গতকাল হঠাৎ করে তার মাল্টি অর্গান ফেল করে সেপ্টিসেমিয়া হয়। অর্থাৎ রক্তের প্লাটিলেট নষ্ট হতে শুরু করে। এ কারণে ডেঙ্গুর ভাইরাস দ্রুত তার ব্রেন, লিভারসহ শরীরের সব জায়গা ছড়িয়ে পড়ে। সে শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকে। তিনি বলেন, হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।’

খায়রুল কবির আরও বলেন, আসন্ন ঈদে অনেকেই বাড়ি ফিরবে এবং ডেঙ্গু রোগী বাড়ার সম্ভাবনা আছে। সে ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য পৃথক কক্ষ ও আসনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানান।

বেলা একটা পর্যন্ত দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের পুরুষ ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি আছে ৩৯ জন, নারী ওয়ার্ডে ৮ জন এবং শিশু ওয়ার্ডে মোট ৩ জন। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জুলাই থেকে আজ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত মোট ১১৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩ জন রোগী বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে।