ডিএসসিসি ও মশক নিবারণ দপ্তরে দুদকের অভিযান

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি), রাজধানীর মশক নিবারণ দপ্তরসহ দেশের আটটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার এসব অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছে দুদকের জনসংযোগ বিভাগ।

দুদক জানায়, মশা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে না, এমন অভিযোগ পেয়ে ডিএসসিসি এবং মশক নিবারণ দপ্তরে (লালবাগ ও ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকায়) দুটি আলাদা অভিযান চালানো হয়। দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন- ১০৬) আসা এক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

দুদকের একটি দল প্রথমে ঢাকা মশক নিবারণ দপ্তরে অভিযান চালায়। সেখানে গিয়ে দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তাকে অনুপস্থিত পাওয়া যায়। ওই দপ্তরে মজুত থাকা মশার ওষুধের ড্রাম খালি অবস্থায় পাওয়া যায়। দুদকের কাছে মনে হয়েছে, সেখানে রাখা ড্রামগুলো অস্বাস্থ্যকর এবং মশার বিস্তারে সহায়ক। গুদামে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং মশার অবাধ বিস্তার ও বিচরণ লক্ষ করে দুদক দল।

পরে দলটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে। মশা মারার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন উত্তর সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে ওষুধ ধার নিয়ে ব্যবহার করছে বলে জেনেছে দুদকের দলটি। তাদের পর্যবেক্ষণ, ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ হারে বাড়লেও আগে যে হারে ওষুধ ব্যবহার করা হতো, সেই একই হারে এখনো ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত চার বছরে কী পরিমাণ মশার ওষুধ কেনা হয়েছে এবং সেগুলো কী হারে ব্যবহার করা হয়েছে, তা আগামীকাল বুধবারের মধ্যে দুদককে জানাতে ডিএসসিসিকে অনুরোধ করেছে দুদকের দলটি।

এদিকে অবৈধ যোগসাজশে রেলওয়ের জমি দখল করে মাটি ভরাট ও স্থাপনা গড়ে তোলার অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে সংস্থার চট্টগ্রাম-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়। সরেজমিনে অভিযানে দেখা যায়, রেলওয়ের এস্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে চট্টগ্রাম নগরীর প্রাণকেন্দ্র আগ্রাবাদ ডেবা, পাহাড়তলি জোড় ডেবা ও ভেলুয়ার দিঘি ইজারা দেওয়া হয়। ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সেগুলো দখলমুক্ত হয়নি। এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোক সেখানে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণের পর ভাড়া দিয়ে অবৈধ অর্থ আয় করছে। এ অনিয়ম ও সরকারি সম্পদ অপচয় রোধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠানোর সুপারিশ করে কমিশনে প্রতিবেদন দেবে দলটি।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙা পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে আরেকটি অভিযান চালায় সংস্থার রাঙামাটি সমন্বিত জেলা কার্যালয়। ১ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে মাটিরাঙা পৌরসভা বাস্তবায়িত দুটি রাস্তার কাজ ও দুটি কালভার্ট নির্মাণকাজের নথি নিরীক্ষা করে দলটি। পরে পৌর মেয়র ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করে দুদক দল। বাস্তবায়িত প্রকল্পের মধ্যে কালভার্টের সংযোগ সড়ক ভাঙা দেখা যায় এবং রাস্তার কাজে কিছু অনিয়ম পাওয়া যায়। টিম তাৎক্ষণিকভাবে উল্লিখিত ত্রুটির বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পৌর মেয়র ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনুরোধ করে।

গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ ও ঝুঁকিপূর্ণ তিস্তা ব্রিজ মেরামতে পদক্ষেপ না নেওয়া, বিদ্যালয় উন্নয়নের জন্য অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও টিআর প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ এবং বোরো মৌসুমে সরকারি ধান সংগ্রহে খাদ্যগুদামের সংশ্লিষ্ট লোকজনেদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের রংপুর, কুষ্টিয়া ও হবিগঞ্জ কার্যালয়ে পাঁচটি অভিযান চালায় দুদক।