ডেঙ্গু প্রতিরোধে চট্টগ্রাম সিটিতে ক্রাশ কর্মসূচি

চট্টগ্রামে গতকাল মঙ্গলবার নতুন করে ৩০ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। এ নিয়ে চট্টগ্রামে সরকারি হিসেবে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৩৫৯ জনে দাঁড়াল।

নতুন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ১৭ জন ভর্তি হয়। এ ছাড়া অন্যান্য সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালে ১৩ জন ভর্তি হয় বলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণকক্ষে কর্তব্যরত চিকিৎসক নুরুল হায়দার জানান।

এদিকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশানিধনে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ক্রাশ প্রোগ্রাম কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। গতকাল সার্কিট হাউসে ‘এডিস মশানিধন এবং ডেঙ্গু রোগপ্রতিরোধ বিষয়ে বিভাগীয় সমন্বয় সভায়’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন। 

সভায় মহানগরসহ বিভাগের ১১টি জেলা ও সংশ্লিষ্ট উপজেলার সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় দিনব্যাপী মশকনিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সার্কিট হাউসের সম্মেলনকক্ষে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় এবং জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পুরো চট্টগ্রামজুড়ে এই ক্রাশ প্রোগ্রাম পরিচালনা করতে হবে। মশকনিধন ও ডেঙ্গু রোগপ্রতিরোধে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন শুরু থেকেই কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রতিদিন ওয়ার্ড এলাকায় ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। জনসচেতনতা সৃষ্টিতে নানামুখী প্রচার–প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালিত করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে ঢাকার চেয়ে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব তুলনামূলক কম। তারপরও আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই। তা ছাড়া ঈদুল আজহার ছুটিতে অনেকেই চট্টগ্রাম আসবে। আমরা যতই বলি জ্বর নিয়ে ঢাকা না ছাড়তে। মানুষ মানবে না। এতে করে ডেঙ্গুর জীবাণু বাহকদের মাধ্যমে আসতে পারে। সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমরা সবাইকে সমন্বয় করে মশকনিধন এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজ করার পরিকল্পনা করেছি।’ 

তিনি আরও বলেন, ছুটিতে যাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,পাড়া–মহল্লায় মশকনিধনে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। একই সঙ্গে নগরের বাজারগুলো পরিচ্ছন্নতায় বিশেষ প্রোগ্রাম করার পরিকল্পনা রয়েছে। 

সভায় এডিস মশানিধন, ডেঙ্গু রোগপ্রতিরোধ বিষয়ে মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা গ্রহণসংক্রান্ত সমন্বয় সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী কর্মসূচিতে জনসচেতনতা সৃষ্টির অংশ হিসেবে নানামুখী প্রচার–প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হয়েছে। উদ্যোগের অংশ হিসেবে একই সময়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় পরিচালিত ক্রাশ প্রোগ্রামে করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিচ্ছন্নকর্মী অংশগ্রহণ করবেন। 

সভায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন, পুলিশের ডিআইজি মো. ফারুক, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোহসেন উদ্দিন আহমদ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক শাহরিয়ার কবির, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বলেন, সবাইকে নিজ উদ্যোগে নিজের ঘর, আঙ্গিনা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ঘরের ফ্রিজ, এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র), ফুলের টবে পানি জমে আছে কিনা তা নিয়মিত দেখতে হবে। কারণ এসব পানিতে এডিস মশা জন্মায়।