ঢাকায় আজ থেকে পশুর হাট, তবে বিক্রি আগেই শুরু

মোহাম্মদপুর-বছিলা হাটের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সাদা–কালো গরুটি এসেছে চুয়াডাঙ্গা থেকে। দাম হাঁকানো হচ্ছে ২০ লাখ টাকা। গত সোমবার হাটে আসা গরুটি দেখতে আশপাশের বাসিন্দারা ভিড় করেন। গতকাল দুপুরে।  ছবি: সাবরিনা ইয়াসমীন
মোহাম্মদপুর-বছিলা হাটের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সাদা–কালো গরুটি এসেছে চুয়াডাঙ্গা থেকে। দাম হাঁকানো হচ্ছে ২০ লাখ টাকা। গত সোমবার হাটে আসা গরুটি দেখতে আশপাশের বাসিন্দারা ভিড় করেন। গতকাল দুপুরে। ছবি: সাবরিনা ইয়াসমীন

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী পশুর হাট আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে আজ বুধবার। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই হাটে গরু আনতে শুরু করেছেন ব্যাপারীরা। এরই মধ্যে বিক্রিও শুরু হয়ে গেছে। ইজারাদারেরা বলছেন, বন্যা পরিস্থিতির কারণে এ বছর নির্ধারিত সময়ের আগেই ব্যবসায়ী ও পাইকারেরা হাটে গরু নিয়ে চলে এসেছেন। মূলত এ কারণেই হাট আগেভাগে শুরু হয়ে গেছে।

ঢাকার দুই সিটিতে কোরবানির পশুর হাট বসছে ২১ টি। ইজারাদারকে দেওয়া কার্যাদেশের শর্তাবলির ১ নম্বরে আছে, ‘গবাদিপশুর হাট ঈদের দিনসহ মোট ছয় দিন চালু থাকবে।’ ১২ আগস্ট পবিত্র ঈদুল আজহা। সে হিসেবে ৭ আগস্টের আগে হাট বসতে পারবে না।

গতকাল মঙ্গলবার দুই সিটির অন্তত ১৩টি হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব হাটেই কোরবানির পশু উঠে গেছে। গরুভর্তি ট্রাক হাটে ঢুকছে। হাসিল আদায়ের নির্ধারিত স্থানে রসিদ ও টাকা রাখার বাক্স নিয়ে অপেক্ষা করছেন ইজারাদারের লোকজন। গরুর পাইকার, ক্রেতা ও আগ্রহী লোকজনের উদ্দেশে মাইকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা, সতর্কতা ও পুরস্কারের কথা ঘোষণা করা হচ্ছে। ট্রাফিক বিভাগ, থানা-পুলিশ, আনসার সদস্যরা নিয়ন্ত্রণকক্ষ ও ওয়াচ টাওয়ারে অবস্থান করছেন। লোকজন হাটে আসছেন। অনেকে দরদাম করছেন।

ইজারাদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সোম ও মঙ্গলবার ১৩টি হাটে ৪১টি গরু ও ৭টি খাসি বিক্রি হয়েছে।

গতকাল ভাটারার সাঈদনগর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটের জন্য নির্ধারিত জায়গা প্রায় ভরে গেছে। নির্ধারিত জায়গার বাইরেও হাটের প্রধান ফটকের সামনে মাদানি অ্যাভিনিউতে (১০০ ফুট সড়ক) বড় প্যান্ডেল করে গরু রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টর হাটেও একই অবস্থা। নির্ধারিত জায়গা প্রায় পরিপূর্ণ। হাটের পাশে সড়ক বিভাজকের ওপরও গরু রেখেছেন অনেক ব্যবসায়ী। কাওলা শিয়ালডাঙা হাটেও গরু উঠে গেছে।

ডিএসসিসির ফ্রেন্ডস ক্লাবসংলগ্ন গোপীবাগ বালুর মাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়ামসংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গার হাটেও ইজারাদারদের প্রস্তুতি শেষ। গতকাল দেখা যায়, হাটের নির্ধারিত জায়গা প্রায় ভরে গেছে। হাটে আরও গরু নিয়ে আসছেন ব্যাপারীরা। গরুর জন্য জায়গা করে দিতে ইজারাদারের লোকজন হাট এলাকায় থাকা অস্থায়ী দোকানপাট সরিয়ে নিতে বলছেন।

মিরপুর ডিওএইচএসের সেতু প্রপার্টির খালি জায়গায় হাটের অংশীদার ইজারাদার জাহিদ হাসান বলেন, রোববার থেকেই হাটে গরু আসতে শুরু করে। বন্যার কারণে ব্যবসায়ীরা আগেই হাটে গরু নিয়ে এসেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের হাট খোলামেলা। তাই লোকজন হাট দেখতে ও বেড়াতেও আসছেন।’

দক্ষিণ সিটির মেরাদিয়া হাটের ইজারাদার মো. শাহ আলম বলেন, হাটে গরু এসে গেছে। ক্রেতারাও হাট ঘুরে দেখছেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কেনাবেচা শুরু হয়নি।

নির্ধারিত সময়ের আগেই হাট বসার ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিএনসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বলেন, ইজারাদারেরা হাটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এর মধ্যেই অনেক ব্যবসায়ী হাটে গরু নিয়ে চলে এসেছেন। তাঁদের ফেরত পাঠানোর সুযোগ নেই। তিনি বলেন, হাট নিয়ে যেকোনো অনিয়ম ঠেকাতে প্রত্যেক অঞ্চলের প্রধান আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে পর্যবেক্ষণ কমিটি করে দেওয়া আছে। কোনো অনিয়ম হলে তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন। হাটে বেচাকেনা শুরু হয়ে গেছে এমন তথ্য তাঁর জানা নেই।

নির্ধারিত সময়ের আগেই হাট বসে যাওয়ার বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন বলেন, ‘হাটে গরু চলে এলে সেটা হয়তো রাখা যায়, কিন্তু বেচাকেনা চলছে এমন তথ্য আমাদের কাছে নেই। কেউ এমন অভিযোগও করেনি।’