গরুর ট্রাক আটকে চাঁদাবাজি, ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে রক্ষা

সিলেট
সিলেট

কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য আনা এক ট্রাক গরু মহাসড়কে আটকে চাঁদা দাবি করা হয়েছিল এক ব্যবসায়ীর কাছে। ওই ব্যবসায়ী জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ‘৯৯৯’-এ ফোন দিয়ে সহযোগিতা চান। পরে পুলিশের তৎপরতায় চাঁদাবাজ চক্রের হাত থেকে রক্ষা পান ওই ব্যবসায়ী।
গত সোমবার সন্ধ্যায় সিলেটের ওসমানীনগর থাকান এলাকার ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। জব্দ করা হয়েছে দুটি মোটরাসাইকেল।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাগুরা থেকে আরিফ শেখ নামের ব্যবসায়ী একটি ট্রাকে করে ১৮টি গরু নিয়ে মাগুরা থেকে সিলেটের কাজীরবাজারের উদ্দেশে রওনা দেন। গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গরুবাহী ট্রাকটি সিলেটের ওসমানীনগর শেরপুর টোলপ্লাজা এলাকায় পৌঁছে সিলেটের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। ট্রাকটি থামানোর জন্য বারবার সংকেত দেন দুই মোটরসাইকেলের পাঁচ আরোহী। এ সময় ট্রাকচালক ট্রাকের গতি বাড়িয়ে দেন। এ ফাঁকে ব্যবসায়ী আরিফ শেখ জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’-এ ফোন দিয়ে ট্রাকের নম্বর উল্লেখ করে অভিযোগ দেন—কয়েকজন ব্যক্তি গরুবাহী ট্রাককে ধাওয়া করছে। একপর্যায়ে গরুবাহী ট্রাকটি ওসমানীনগর থানা এলাকার ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকা পৌঁছালে দুটি মোটরসাইকেলে থাকা পাঁচ আরোহী পথ আগলে দাঁড়ান। এ সময় ট্রাকে থাকা ব্যবসায়ীকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন পাঁচ ব্যক্তি। তাঁরা শেরপুর টোলপ্লাজা এলাকায় ট্রাক থামার সংকেত দেওয়া হলেও কেন থামানো হয়নি, এ নিয়েও শাসান ব্যবসায়ীকে। উল্লেখিত চাঁদা না দেওয়া হলে ট্রাকসহ গরু ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
এদিকে জাতীয় জরুরি সেবা থেকে নির্দেশনা পেয়ে সিলেট ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আল মামুনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকায় পৌঁছে গরুবাহী ট্রাকটি ঘেরাও করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচ ব্যক্তিকে আটক করে এবং দুই মোটরসাইকেল জব্দ করে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী আরিফ শেখ সিলেটের ওসমানীনগর থানায় গত সোমবার রাতেই পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ সিলেট নগরের মাছিমপুর এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম (৩৮), গোলাপগঞ্জ আমরু কদমরসূল গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ তাফরিদ চৌধুরী (২১), সিলেট নগরের নওয়াগাঁও সাদিপুরের শাকিল আলম খান (২১), দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজারের শিলাম মাইঝপাড়া গ্রামের শামছুল ইসলাম (২৫) ও দক্ষিণ সুরমা বলদী এলাকার মেহের হাসানকে (২১) আটক করে।
ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আল মামুন প্রথম আলোকে জানান, সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনের নির্দেশনা ছিল ঈদুল আজহা উপলক্ষে মহাসড়ক দিয়ে আসা গরুবাহী ট্রাক আটকে চাঁদাবাজি এবং ছিনতাই রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের। সে নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ সতর্ক ছিল। এর মধ্যে খবর আসে, মহাসড়কে একটি গরুবাহী ট্রাককে ধাওয়া দিচ্ছে একদল চাঁদাবাজ। খবর পেয়েই তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করা হয়। পরে ব্যবসায়ীর দেওয়া মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ওসমানীনগর এলাকার কেউ নেই। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে, তাঁরা কার হয়ে কাজ করতেন এবং তাঁদের সঙ্গে কোনো হাটের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না।