বরগুনায় কলেজছাত্র অনিক হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড

অনিক চন্দ্র রায়
অনিক চন্দ্র রায়

বরগুনায় সরকারি কারিগরি (ভোকেশনাল) ইনস্টিটিউটের একাদশ শ্রেণির ছাত্র অনিক চন্দ্র রায়কে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুমের দায়ে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার অপর দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় থানাপাড়া এলাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় অনিক। এরপর অনিককে অপহরণের পর হত্যা করে বরগুনা সদর থানার সামনের পুরোনো সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয় হত্যাকারীরা। ১৭ দিন পর এক আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অনিকের গলিত মৃতদেহ সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

আলোচিত এই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বরগুনা শহরের থানাপাড়া এলাকার সালাউদ্দীনকে (২৫) মৃত্যুদণ্ড এবং সদর উপজেলার গৌরীচন্না এলাকার নাজমুল (২৬) ও থানাপাড়া এলাকার রুবেলকে (২৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন এবং নাজমুল জামিনে বের হয়ে পলাতক আছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বরগুনা শহরের থানাপাড়া এলাকার কলেজছাত্র অনিক বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। এরপর অপহরণকারী সালাউদ্দীন অনিকের বাবার কাছে ফোনে প্রথমে দুই লাখ ও পরে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণের টাকা নিয়ে তাঁর বাবাকে বরগুনার আমতলী ফেরিঘাটে যেতে বলেন অপহরণকারীরা। কিন্তু টাকা নিয়ে আমতলী যাওয়ার পর অপহরণকারীদের মুঠোফোন বন্ধ পান তিনি।

এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বরগুনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন অনিকের বাবা সুবল চন্দ্র রায়। পরে জিডিটি অপহরণের পর হত্যা ও মরদেহ গুমের মামলায় পরিণত হয়। এ মামলায় পুলিশ সালাউদ্দীন, নাজমুল ও রুবেলকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

এ বিষয়ে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হলেও অনিকের পরিবারের মধ্যে অসন্তোষ আছে। তাদের প্রত্যাশা ছিল, এ মামলার সব আসামির ফাঁসির আদেশ হবে।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী কমল কান্তি দাশ ও আবদুর রহমান বলেন, ‘মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। এ জন্য আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’