মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে টাকা নিচ্ছে হাতিটি

সড়কে চলাচলকারী যানবাহন থামিয়ে হাতি দিয়ে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। পদ্মার মোড়, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী, ২১ আগস্ট। ছবি: এম রাশেদুল হক
সড়কে চলাচলকারী যানবাহন থামিয়ে হাতি দিয়ে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। পদ্মার মোড়, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী, ২১ আগস্ট। ছবি: এম রাশেদুল হক

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গত দুই দিন ধরে একটি বড় মা হাতি ও তার শাবক মানুষ ও গাড়ি থামিয়ে টাকা আদায় করছে। এক প্রকার জোর করে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

আজ বুধবার দেখা গেল, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গোয়ালন্দের পদ্মার মোড় এলাকায় ঢাকাগামী একটি ব্যক্তিগত গাড়ির সামনে শূর উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে এক হাতি। এ নিয়ে গাড়িচালকের সঙ্গে হাতির মাহুতের কিছুক্ষণ কথা-কাটাকাটি হয়। পরে গাড়িচালক বাধ্য হয়ে কিছু টাকা বের করে দেন।

এরপর ফরিদপুর থেকে আসা দৌলতদিয়া ঘাটগামী আরেকটি পরিবহনের পথরোধ করে দাঁড়ায় হাতিটি। ১০ টাকা দেওয়ার পর হাতিটি সরে দাঁড়ায়। এ সময় বাসের সহকারী আলামিন ইসলাম ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘এরা পাইছে কী? প্রায় দেখি রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে গাড়ি আটকে জোর করে টাকা আদায় করে। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত হাতি সরে না। দ্রুত গতির গাড়ি থামাতে গেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে।’

এই হাতির মাহুতের নাম আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, নাটোর থেকে কয়েক দিন আগে ফরিদপুর এসেছেন। এই হাতির মালিক তিনি নন। হাতির মালিক তাঁকে মাহুত হিসেবে রেখেছেন। এখানে তিনি সার্কাস দলের সঙ্গে এসেছেন। দুই-তিন দিন ধরে রাতে খেলা দেখানো শেষে প্রতিদিন সাত-সকালে বাচ্চা হাতি ও তার মাকে নিয়ে খাবারের সন্ধানে এই এলাকায় আসেন। এভাবে গাড়ি থামিয়ে বা পথরোধ করে টাকা আদায় করা এক ধরনের চাঁদাবাজি, এটা কি ঠিক?—জবাবে মাহুত বলেন, প্রতিদিন হাতি ও তার শাবকের যে খাবার লাগে এর জোগান দিতে গিয়ে তাঁকে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দিন শেষে নিজের ও হাতির খাবার দিয়ে ২-৩ হাজার টাকা থাকে। সন্ধ্যায় হাতি ও তার শাবকসহ ফিরে এই টাকা আবার মালিকের হাতে দিতে হয়। এটাকে কেউ চাঁদাবাজি বললে তাঁর কিছু বলার নেই।

দৌলতদিয়া ঘাটে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আবুল হোসেন বলেন, ‘এটা ঠিক না। গাড়ি বা কোনো ব্যক্তিকে থামিয়ে টাকা আদায় করা চাঁদাবাজির অংশ। কেউ এ ধরনের অভিযোগ করলে বা আমাদের সামনে পড়লে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।’