ডেঙ্গুতে নারী ও কিশোরের মৃত্যু

সাতক্ষীরায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এক কিশোর ও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে এক নারী ও সন্ধ্যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক কিশোর মারা যায়।

ওই নারীর নাম শাহানারা খাতুন (৩৭)। কিশোরের নাম আলমগীর হোসেন গাজী (১৪)। শাহানারা খাতুনের বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী গ্রামে। স্বামীর নাম খলিলুর রহমান। আলমগীর হোসেনের বাড়ি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার শ্রীকলা গ্রামে। বাবার নাম সিরাজুল ইসলাম গাজী।

শাহানারা খাতুনের স্বামী খলিলুর রহমান জানান, ১৮ আগস্ট ডেঙ্গু শনাক্ত হলে শাহানারাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে হঠাৎ তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর কথা বলেন চিকিৎসকেরা। খুলনায় নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আসাদুজ্জামান জানান, শাহানারা খাতুনের অবস্থার অবনতি ঘটলে রাতে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা অথবা অন্য কোথাও নিয়ে যেতে বলেছিলেন।

কিশোর আলমগীর হোসেনের ভাই সুজন গাজী জানান, তার ভাই যশোরের কওমিয়া মাদ্রাসায় পড়ত। ১৯ আগস্ট জ্বরে আক্রান্ত হলে তাকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে রক্ত পরীক্ষায় তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর থেকে সে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিল। গতকাল সকালে অবস্থার অবনতি হলে তাকে প্রথমে সাতক্ষীরায় সদর হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শেখ তৈয়েবুর রহমান জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আলমগীর কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিল। এরপর সকালে অবস্থার অবনতি হলে তাকে সাতক্ষীরায় স্থানান্তর করা হয়।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন আবু শাহিন ডেঙ্গু জ্বরে দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

আবু শাহিন জানান, আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ৩০৮ জন ডেঙ্গু রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৫১ জন। ৪০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ২১৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছে ১৬ জন।