গাইবান্ধায় প্রকাশ্যে কারেন্ট জাল বিক্রি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল। ১৮ আগস্ট গোলাপবাগ হাটে।  ছবি: প্রথম আলো
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল। ১৮ আগস্ট গোলাপবাগ হাটে। ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গোলাপবাগ হাটে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল অবাধে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব জাল দিয়ে বিভিন্ন নদ-নদী ও খাল-বিলে দেশীয় প্রজাতির ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ নিধন করা হচ্ছে। বর্ষার শুরু থেকে এসব জাল দিয়ে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর আরও বেড়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ক্ষুদ্র জাল ব্যবসায়ী জানান, উত্তরবঙ্গে কারেন্ট জালের সবচেয়ে বড় পাইকারি ব্যবসাকেন্দ্র গোলাপবাগ হাট। এ হাট থেকে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকার কারেন্ট জাল ছোট ব্যবসায়ীরা পাইকারি মূল্যে কিনে নিয়ে যান। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন হাটবাজারে এসব জাল খুচরা বিক্রি করা হয়।

গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মতিন মোল্লা বলেন, গোলাপবাগে সপ্তাহের রোববার ও বৃহস্পতিবার হাট বসে। এ দুই দিন প্রকাশ্যে প্রায় অর্ধশত ব্যবসায়ী চটে করে, আবার কেউ দাঁড়িয়ে কারেন্ট জাল বিক্রি করেন। প্রতিদিন পাইকারি ও খুচরা বাজারে কয়েক লাখ টাকার কারেন্ট জাল বিক্রি হচ্ছে এ হাটে।

এ উপজেলা দিয়ে করতোয়া ও বাঙ্গালী নদী, তারদহ ও নুরুলের বিলসহ অনেক খাল-বিল রয়েছে। এসব জলাশয়ে এখন যথেষ্ট দেশি মাছ পাওয়া যাচ্ছে। বর্ষায় এসব নদী-নালা, খাল-বিলে মাছ ডিম ছাড়ায় প্রচুর রেণু-পোনা জন্ম নিয়েছে। এ অবস্থায় বিভিন্ন হাটবাজারে কারেন্ট জালের বিক্রি বেড়ে গেছে।

গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার কালিকাডোবা গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কারেন্ট জাল বিক্রি অবৈধ কি না, জানি না। তবে গ্রামের অনেকেই গোলাপবাগ হাট থেকে এ জাল কিনে এনে বিক্রি করেন। তাই আমিও করছি।’

রাখালবুররুজ ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামের টুকু মিয়া বলেন, বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের মানুষ কারেন্ট জাল কিনে খাল-বিল, নদী-নালায় ব্যাপক হারে মাছ ধরছে। এভাবে ধরলে মাছের বংশবিস্তার হবে না।

উপজেলা মৎস্য সমিতির নেতা আবদুল জলিল বলেন, করতোয়া ও বাঙ্গালী নদী এবং উপজেলার সবচেয়ে বড় মৎস্যভান্ডার হিসেবে খ্যাত নুরুলের বিলসহ ছোট-বড় সব জলাশয়ে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে সব ধরনের মাছ ধ্বংস করা হচ্ছে। নিষিদ্ধ হলেও প্রকাশ্যে এসব জাল পাওয়া যাওয়ার কারণে মানুষ অজান্তেই মৎস্য সম্পদের বিরাট ক্ষতি করছে।