ভাগাড়ের আবর্জনা রাস্তায়

সড়কের পাশের ভাগাড়ের ময়লা রাস্তায় এসে পড়েছে। এতে মূল রাস্তা অর্ধেক হয়ে গেছে। গতকাল রাজশাহী নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো
সড়কের পাশের ভাগাড়ের ময়লা রাস্তায় এসে পড়েছে। এতে মূল রাস্তা অর্ধেক হয়ে গেছে। গতকাল রাজশাহী নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

দুই পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় রাস্তা খুব সরু হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে লোকজন চলাচল করছেন নাক চেপে। এ রকম দৃশ্যের দেখা মিলছে রাজশাহী নগরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায়। রাস্তার পাশে থাকা ভাগাড়ে সিটি করপোরেশনের ময়লা জমতে জমতে কোথাও কোথাও তা বিশাল রাস্তার অর্ধেক অংশ দখল করে ফেলেছে। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে নগরবাসী।

নগরবাসীর অভিযোগ, এসব রাস্তা দিয়ে নাক চেপে হাঁটতে হয়। ময়লায় রাস্তার অর্ধেক দখল হয়ে যাওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। আবার যানবাহন ধীরে চলায় বেশি সময় ধরে দুর্গন্ধ সহ্য করতে হয় যাত্রী ও পথচারীদের।

গতকাল রোববার রাজশাহী নগরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন রাস্তার পাশে গড়ে তোলা ভাগাড়ে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ময়লা ফেলছেন। আবর্জনাগুলো জমা হতে হতে রাস্তায় এসে পড়ছে। নগরের কাদিরগঞ্জ থেকে নিউমার্কেট যাওয়ার রাস্তায়, টিবি পুকুর মোড়, সিটি বাইপাস মোড়, শেখপাড়া এলাকায় পদ্মাপারের রাস্তাসহ অন্তত ১৫টি জায়গায় ভাগাড়ের ময়লা রাস্তায় এসে পড়েছে। এতে মূল রাস্তা অর্ধেক হয়ে গেছে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন বাড়ি থেকে সংগৃহীত ময়লা-আবর্জনা এনে জড়ো করে রাখা হয় এসব রাস্তার পাশের ভাগাড়ে। প্রতিদিন নগর থেকে প্রায় সাড়ে তিন শ মেট্রিক টন বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়। এসব ময়লা-আবর্জনা ঠিক সময়ে না সরানোয় রাস্তাগুলো ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ময়লা-আবর্জনা জমে থাকায় রাস্তা কোথাও কোথাও ছোট হয়ে গেছে। 

নগরের কাদিরগঞ্জ থেকে নিউমার্কেটের দিকে হেঁটে আসার সময় নাক চেপে ধরে যাচ্ছিলেন হাসিনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘প্রচণ্ড গরম আর দুর্গন্ধ। নাক চেপে না গেলে মারা পড়তে হবে।’ তাঁর অভিযোগ, সিটি করপোরেশন এখানে ময়লা জমাতে জমাতে পুরো রাস্তাটাই ডাস্টবিন করে ফেলেছে।

সেখান দিয়ে যাওয়া এক অটোরিকশাচালক যানটি থামিয়ে বলেন, দুপুরের পর থেকেই ময়লা ফেলা শুরু হয়। বিকেল হতে হতেই ময়লা জমে রাস্তায় এসে পড়ে। এসব আবর্জনা একনাগাড়ে কয়েক দিন রাস্তায়ই পড়ে থাকে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

নগরীর শেখপাড়া এলাকায় কথা হয় পথচারী মিজানুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের এ রাস্তা দিয়ে যাওয়া যায় না। দুর্গন্ধে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। তাই নাক-মুখ চেপে চলতে হয়। তাঁর অভিযোগ, ভাগাড় থাকলেও ময়লাগুলো পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা রাস্তায় ফেলে রেখে যান। শহরের ময়লা-আবর্জনা বেড়ে গেছে। এদিকে ভাগাড়গুলো ছোট। তাই আবর্জনা রাখার জায়গা কম। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আরও ভাগাড় করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন বলেন, শহরে আবর্জনার পরিমাণ বেড়ে গেছে। কিন্তু রাস্তার পাশে ভাগাড়গুলো আগের মতো ছোটই আছে। তাঁরা শিগগিরই এই ভাগাড়গুলো এমনভাবে পুনর্নির্মাণ করবেন, যাতে আবর্জনা আর রাস্তা পর্যন্ত না যেতে পারে। নতুন ভাগাড় নির্মাণ করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আপাতত আমাদের চিন্তা নেই নতুন করে ডাস্টবিন করার।’