কালাইয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১

নিহত সামছুল ইসলাম।
নিহত সামছুল ইসলাম।

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিবদমান দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তি মারা গেছেন।

নিহত ব্যক্তির নাম সামছুল ইসলাম (৬০)। তিনি উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের কুসুমসাড়ার বাসিন্দা।

পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবদুল হান্নান বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ ওই মামলায় শামীম হোসেন (২৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কুসুমসাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটি উন্মুক্ত ছিল। গ্রামের লোকজন মাঠটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতেন। তবে ছয় থেকে সাত মাস আগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মামুনুর রশিদ উন্মুক্ত মাঠটি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলেন। এতে গ্রামের লোকজন মাঠটিতে খেলাধুলাসহ অন্যান্য কাজকর্ম করতে পারছিলেন না। মামুনুর রশিদ আওয়ামী লীগের নেতা ও মাত্রাই ইউপি চেয়ারম্যান লজিক তালুকদারের সমর্থক বলে পরিচিত। ইউপি চেয়ারম্যান লজিক তালুকদারের সঙ্গে কালাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমানের মধ্যে দীর্ঘদিন রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছে। মিনফুজুর রহমানের সমর্থকেরা বিদ্যালয় মাঠে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখার ঘটনাটি মানতে পারেননি। শুক্রবার রাতে বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী মেহেদী হাসান বিদ্যালয়ে ছিলেন না। তাঁর বাবা সামছুল ইসলাম বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। রাত আটটার দিকে মিনফুজুর রহমানের ১০ থেকে ১২ জন সমর্থক বিদ্যালয়ের বেড়া খুলতে যান। এ সময় সামছুল ইসলাম তাতে বাধা দেন। এতে ওই সমার্থকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে সামছুলকে মারধর করেন। মারধরের খবর ছড়িয়ে পড়লে ইউপি চেয়ারম্যান লজিকের সমর্থকেরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সামছুল ইসলামসহ চারজন আহত হন। তাঁদের মধ্যে সামছুল ইসলামের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে ওই দিন রাতেই বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তিনি মারা যান।

কালাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মালেক বলেন, বিদ্যালয় মাঠের বেড়া খোলা নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কালাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান ও আওয়ামী লীগের নেতা মাত্রাই ইউপি চেয়ারম্যান লজিক তালুদারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মাত্রাই ইউপির সদস্য আবদুল হান্নান ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আর ১০ থেকে ১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। গ্রামটিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।