লাল-সবুজে মোড়ানো বিদ্যালয়

সংস্কারের পর সম্পূর্ণ নতুন রূপ পেয়েছে চরঝাউগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রঙিন বিদ্যালয়ে আসতে শিশুদের আগ্রহও বেড়ে গেছে। ছবি: প্রথম আলো
সংস্কারের পর সম্পূর্ণ নতুন রূপ পেয়েছে চরঝাউগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রঙিন বিদ্যালয়ে আসতে শিশুদের আগ্রহও বেড়ে গেছে। ছবি: প্রথম আলো

ব্যস্ত মহাসড়ক লাগোয়া বিদ্যালয়। কোনো সীমানাপ্রাচীর নেই। ছোট ছোট শিশুরা যখন স্কুলমাঠে দৌড়ায়, তখন ভয়ে বুক কেঁপে ওঠে সবার। কখন না জানি দুর্ঘটনা ঘটে যায়। বছরখানেক আগের কথা সেটি। এখন বিদ্যালয়টিতে সীমানাপ্রাচীর হয়েছে। লাল আর সবুজ রঙে দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে বিদ্যালয় ভবনটিও। 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নাম চরঝাউগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এটি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরঝাউগড়া গ্রামে অবস্থিত। স্কুলটির পাশেই ময়মনসিংহ-শম্ভুগঞ্জ মহাসড়ক। সম্প্রতি বিদ্যালয়টির সংস্কারকাজ করা হয়। সংস্কার শেষে দ্বিতল বিদ্যালয় ভবনটিকে জাতীয় পতাকার আদলে রং করা হয়েছে। এতে ভবনটির সৌন্দর্য বেড়েছে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের ভেতর করা হয়েছে একটি ছোট বাগান। বাগানটিও স্কুলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে। 

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এ বিদ্যালয়ে এক বছর আগেও সীমানাপ্রাচীর ছিল না। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ছিল মাঠে খেলা করা। এ ছাড়া সীমানাপ্রাচীর না থাকায় বিদ্যালয় মাঠ দখল করে বাস রাখা হতো। শিক্ষকেরা বাস রাখার প্রতিবাদ করলে স্থানীয় প্রভাবশালীরা খারাপ আচরণ করতেন। পরে শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয়টিতে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। আর গত জানুয়ারি মাসে বিদ্যালয়ের দোতলা ভবনটি সংস্কারের জন্য আবেদন করেন প্রধান শিক্ষক আরিফা আলম। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই টাকায় বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও লাল–সবুজ রং করা হয়। বিদ্যালয়ের ভেতরের দেয়ালে আঁকা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন দেয়ালচিত্র। 

বিদ্যালয়টি দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা ও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী তুরণ পাল বলে, ‘আগে আমাদের স্কুলটি দেখতে ভালো লাগত না। এ কারণে অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসতে চাইত না। নতুন রং করার পর এখন স্কুলে আসতে সবার ভালো লাগে।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফা আলম বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে লাল-সবুজ রঙে সাজানোর জন্য আমাদের প্রতি মৌখিক নির্দেশনা আছে। সে কারণে সংস্কারের সময় আমরা বিদ্যালয়টিকে নতুন করে রং করিয়েছি। জাতীয় পতাকার আদলে রং করায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেমের চেতনা আরও বাড়বে বলে আমি মনে করি।’