ডেঙ্গু : সবার নজর সেপ্টেম্বরে

সেপ্টেম্বরের প্রথম দিন গতকাল রোববার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৯০২ জন রোগী ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি গত মাসের পর্যায়ে ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা খুবই ক্ষীণ। গত বছরের তুলনায় এবার সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুতে অনেক বেশি মানুষ আক্রান্ত হতে পারে।

গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানে সেপ্টেম্বরে বেশিসংখ্যক মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে দেখা গেছে।

এই পরিসংখ্যান তৈরি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম। কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক আয়শা আক্তার গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, গত ১৯ বছরের মধ্যে ২০১৮ সালে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ছিল, ১০ হাজার ১৪৮ জন। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসেই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছিল। গত পাঁচ–ছয় বছর সেপ্টেম্বর মাসেই বেশি আক্রান্ত হতে দেখা গেছে।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে সরকারের রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরিচালক অধ্যাপক সানিয়া তহমিনা সাংবাদিকদের বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ কমতে শুরু করেছে। আগস্টের চেয়ে আক্রান্তের সংখ্যা এ মাসে কমে আসবে। তবে গত বছরের চেয়ে এই সেপ্টেম্বরে রোগী বাড়বে।
গত বছর সেপ্টেম্বরে হাসপাতালে ৩ হাজার ৮৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছিল। অর্থাৎ দিনে গড়ে ১০৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছিল। আর এ বছর ১ সেপ্টেম্বরেই ভর্তি হয়েছে ৯০২ জন। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে ৪৯৭ জন।

এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মোট ৭১ হাজার ৯৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে আগস্ট মাসেই ভর্তি হয়েছে ৫২ হাজার ৬৩৬ জন। আগস্টের ৭ তারিখ এক দিনেই ভর্তি হয়েছিল ২ হাজার ৪২৮ জন।

তবে সেপ্টেম্বরে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা বাড়তে পারে বলে অন্তত একজন কীটতত্ত্ববিদ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কীটতত্ত্ববিদ মঞ্জুর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, কোনো এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষ আসার পর এডিস মশার মাধ্যমে ডেঙ্গুর ব্যাপক বিস্তার ঘটতে প্রায় এক মাস সময় লাগে। ১২ আগস্ট ছিল ঈদ। এর আগে আগে কয়েক লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়, যাদের অনেকেই ডেঙ্গু আক্রান্ত ছিল। সেই হিসাবে এক মাস পর অর্থাৎ এ মাসের ১০–১১ তারিখে কিছু জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে।

অন্যদিকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আগস্টের পরিস্থিতি এ বছর আর ফিরবে না। তবে সংক্রমণ একেবারে কমে যাবে, এটা ভাবারও কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। এখনো যে সংখ্যক মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, তা উদ্বেগজনক।