ধর্ষণ, হয়রানির দ্রুত বিচারের দাবি

পুরান ঢাকার হাটখোলা রোডে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটিতে গতকাল ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
পুরান ঢাকার হাটখোলা রোডে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটিতে গতকাল ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সারা দেশে ব্যাপক ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এসব ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেছে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে পুরান ঢাকার হাটখোলা রোডে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে মানববন্ধনের মাধ্যমে এ দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এলাকার সাধারণ মানুষ অংশ নেন। 

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা ‘এই হোক অঙ্গীকার, ধর্ষণ যৌন নিপীড়ন নয় আর’, ‘তোল হুংকার মোছ ভয়’, ‘ধর্ষণ-হত্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও একসাথে’ এমন বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেন। আয়োজকেরা সায়েমা, আয়েশা, নুসরাত, রূপা, শাহীনুরসহ ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের পর হত্যার শিকার হওয়া বেশ কয়েকজনের ছবিতে বিচারের দাবি যোগ করা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশ নেন। মানববন্ধনে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পারভীন হাসান, কোষাধ্যক্ষ এম মোফাখখারুল ইসলাম, অধ্যাপক মালেকা বেগম, অধ্যাপক আবদুস সেলিম, অধ্যাপক হাসান শিরাজী, অধ্যাপক শাহনাজ পারভীন, সজীব সরকার, তাসলিমা আখতার প্রমুখ বক্তব্য দেন। 

বক্তব্যে তাঁরা বলেন, সারা দেশে নারী-শিশু-বৃদ্ধা-প্রতিবন্ধী-ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নারী কেউ নিরাপদে নেই। শিশু-নারী ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং হত্যার সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সমাজের মধ্যে একটা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। শিক্ষকসহ পরিবারের নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে যৌন হয়রানি এবং ধর্ষণের ঘটনাও সামনে আসছে। বক্তারা এসব ঘটনার জন্য বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং পুরুষতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে দায়ী করেন। তাঁরা বলেন, বিচারের গতি ধীর কিংবা অপরাধীদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিচারের আওতায় না আনতে পারার ব্যর্থতা এ ধরনের ঘটনা বৃদ্ধি এবং পুনরাবৃত্তির জন্য দায়ী। 

মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, ‘আমরা এমন সমাজে বাস করছি, যেখানে নাগরিক হিসেবে নারীর পূর্ণ অধিকার নেই, সম্পত্তিতে ও অভিভাবকত্বে সমানাধিকার নেই, রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা।’ তাঁরা বলেন, বিচারহীনতা ও পুরুষতান্ত্রিক সংস্কৃতির কারণে সমাজের উঁচু স্তরের মানুষের পাশাপাশি একজন রংমিস্ত্রি, বাসের চালক কিংবা শিক্ষকের মতো ব্যক্তিরাও নির্ভয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটাচ্ছেন। তাই সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি পুরুষতান্ত্রিক সংস্কৃতি যা নারীকে অবমাননা করে, অসম্মান করে কিংবা নারী শরীরকে যৌন বস্তুতে পরিণত করে, আক্রমণের শিকার করে—সেই সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার সময় এসেছে। বিজ্ঞপ্তি