প্রতি তিনজনের একজন তরুণ-তরুণী অনলাইনে উৎপীড়নের শিকার

ইউনিসেফ
ইউনিসেফ

বিশ্বের প্রতি তিনজন তরুণ-তরুণীর একজন অনলাইনে উৎপীড়নের শিকার হন। আর প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন সাইবার উৎপীড়নের কারণে স্কুল বাদ দিয়েছে।

ইউনিসেফ এবং শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা–বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধির (এসআরএসজি) করা এক জরিপে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আজ বুধবার এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

‘ইউ-রিপোর্টে’র মাধ্যমে তরুণ-তরুণীরা নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে এই জরিপে অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীদের তিন-চতুর্থাংশ বলেছেন, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো অনলাইন উৎপীড়নের সবচেয়ে পরিচিত স্থান।

গত ৩০ জুনের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের ৪৫ শতাংশ ইউ রিপোর্টার জানিয়েছেন যে তাঁরা অনলাইনে উৎপীড়নের শিকার হয়েছেন।
জরিপের অংশ হিসেবে অনলাইনে উৎপীড়ন ও সহিংসতা বন্ধের দায়িত্ব কার বলে তরুণ–তরুণীরা মনে করেন জানতে চাওয়া হয়। জরিপে ৩২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানান, অনলাইনে উৎপীড়ন বন্ধে সরকারকেই দায়িত্ব নেওয়া উচিত । এ ছাড়া জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৩১ শতাংশ এ ক্ষেত্রে তরুণ সমাজের এবং ২৯ শতাংশ ইন্টারনেট কোম্পানির দায়িত্বের কথা উল্লেখ করেন।

শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা–বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি (এসআরএসজি) নাজাত মাল্লা মজিদ বলেন, ‘এখানে আমরা সবাই একত্রে আছি এবং অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই দায়িত্বটি ভাগ করে নিতে হবে।’
১৩-২৪ বছর বয়সী ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি ইউ-রিপোর্টার এই জরিপে অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে আছেন আলবেনিয়া, বাংলাদেশ, বেলিজ, বলিভিয়া, ব্রাজিল, বুর্কিনা ফাসো, আইভরি কোস্ট, ইকুয়েডর, ফ্রান্স, গাম্বিয়া, ঘানা, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, জ্যামাইকা, কসোভো, লাইবেরিয়া, মালাবি, মালয়েশিয়া, মালি, মোলদোভা, মন্টিনিগ্রো, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, রোমানিয়া, সিয়েরা লিওন, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, ইউক্রেন, ভিয়েতনাম ও জিম্বাবুয়ের তরুণেরাও।
সহপাঠীদের মধ্যে সাইবার উৎপীড়ন একটি উচ্চবিত্ত সমাজের বিষয় বলে যে ধারণা প্রচলিত রয়েছে তাকে চ্যালেঞ্জ করে এই বৈশ্বিক জরিপের ফল। উদাহরণস্বরূপ, উপ-সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলের ৩৪ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানান, তাঁরা অনলাইনে উৎপীড়নের শিকার হয়েছিলেন।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী উচ্চ-আয় ও নিম্ন-আয়–উভয় শ্রেণির দেশগুলোর তরুণ জনগোষ্ঠীই আমাদের বলছে যে তারা অনলাইনে উৎপীড়নের শিকার হচ্ছে। যা তাদের পড়াশোনায় প্রভাব ফেলছে এবং এটি তারা বন্ধ করতে চায়। আমরা যেহেতু শিশু অধিকার–বিষয়ক কনভেনশনের ৩০তম বার্ষিকীতে পদার্পণ করেছি, তাই ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নীতিমালার সর্বাগ্রে যাতে শিশু অধিকারের বিষয়টি থাকে, তা আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’