প্রথম যকৃৎ প্রতিস্থাপন করা সিরাতুল মারা গেলেন ডেঙ্গুতে

যকৃৎ প্রতিস্থাপনের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে সিরাতুলকে পরিচয় করিয়ে দেন চিকিৎসকেরা। ফাইল ছবি
যকৃৎ প্রতিস্থাপনের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে সিরাতুলকে পরিচয় করিয়ে দেন চিকিৎসকেরা। ফাইল ছবি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) প্রথম যকৃৎ প্রতিস্থাপন করা ২০ বছর বয়সী সেই তরুণ সিরাতুল ইসলাম ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। তিনি মারা গেছেন গত ১৩ আগস্ট ঈদের পরের দিন।

আজ রোববার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন,‘ঈদের দিন রাতে ছেলেটি ভর্তি হয়। ঈদের পরের দিনই ডেঙ্গুতে মারা যায়। যখন সে এসেছিল তখন আর আমাদের আয়ত্তের মধ্যে তিনি ছিলেন না। কিছু করার আগেই আয়ত্তের বাইরে চলে যায়।’

মায়ের যকৃৎ সিরাতুলের শরীরে প্রতিস্থাপন করেছিলেন বিএসএমএমইউয়ের চিকিৎসকেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের এটি ছিল প্রথম যকৃৎ প্রতিস্থাপনের ঘটনা। এ উপলক্ষে গত ২৬ জুন সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. জুলফিকার রহমান খানের নেতৃত্বে এই প্রতিস্থাপন হয়েছিল। অধ্যাপক মো. জুলফিকার রহমান খান সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন ‘২৪ জুন ভোরবেলায় এই অস্ত্রোপচার শুরু হয়। শেষ হতে সময় লাগে ১৬ ঘণ্টার বেশি। এই চিকিৎসা হয়েছে প্রায় বিনা মূল্যে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৫০ জন চিকিৎসক এই অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে নানাভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন।

অস্ত্রোপচারের পর সিরাতুল হাসিমুখেই বাড়ি ফিরেছিলেন। সে খবরও গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছিল। তবে গত ১৩ আগস্ট সিরাতুল বিএসএমএমইউয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে সে খবর গণমাধ্যমে জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

২০ বছর বয়সী কলেজছাত্র সিরাতুলের লিভার সিরোসিস ধরা পড়েছিল দুই বছর আগে। চিকিৎসকেরা যকৃৎ প্রতিস্থাপনকেই উত্তম বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।

জুলফিকার রহমান খান আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েই কলেজছাত্র সিরাতুলের মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। সিরাতুলের চিকিৎসাসংক্রান্ত সব কাগজপত্র আমাদের কাছে আছে। তাঁর এভাবে মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক।’