এরশাদের পর রওশনও গৃহপালিত বিরোধীদলীয় নেতা: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

‘এরশাদকে ক্ষমতা দখল করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া’—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য অসত্য উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, খালেদা জিয়া কোনোভাবেই জড়িত ছিলেন না। তিনি অভিযোগ করেন, এরশাদকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন।

আজ সোমবার সকালে শেরেবাংলা নগরে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এই সংসদে এরশাদের পর রওশন এরশাদও গৃহপালিত বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব নিয়েছেন।

গতকাল রোববার সংসদ অধিবেশনে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের মৃত্যুতে আনা শোকপ্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আদালতের রায় অনুযায়ী সাবেক সেনা শাসক জিয়াউর রহমান এবং এইচ এম এরশাদের শাসনামল অবৈধ। এ দুজনের কাউকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করা বৈধ নয়। এই রায়ের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখার সুযোগ হয়েছে। তিনি বলেন, ১৯৮২ সালে এরশাদকে ক্ষমতা দখল করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সমালোচনায় মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, সংসদে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই অসত্য কথা বলেন, যার কোনো ভিত্তি নেই, ইতিহাস তা সাক্ষ্য দেয় না। এরশাদ যখন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দিয়ে ক্ষমতা দখল করে তখন শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তের কাছে বলেছিলেন এরশাদ আসাতে তিনি অখুশি নন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এরশাদকে সঙ্গে নিয়েই এ দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন এবং মানুষের অধিকারকে কেড়ে নিয়েছেন। কারণ, বরাবরই তিনি এরশাদকে সঙ্গে নিয়েই অ্যালায়েন্স করেছেন এবং তাঁদের সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করে তাদেরই (জাতীয় পার্টি) বিরোধী দলে বসিয়েছেন। যেটাকে আমরা বলি এরশাদ হচ্ছে সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনার গৃহপালিত বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন এবং তাঁর মৃত্যুর পরে এখন সেই দায়িত্ব নিয়েছেন রওশন এরশাদ।’

খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাঁকে কারাগারে আটক করে রেখেছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। তাঁর কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা হচ্ছে না। তিনি জানান, মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করার শপথ নিয়েছেন তাঁরা।

জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।