বইপ্রেমীদের দুদণ্ড শান্তি দেয় যে গ্রন্থাগার

লাইব্রেরিতে প্রবেশের মূল পথ। ছবি: আনোয়ার হোসেন
লাইব্রেরিতে প্রবেশের মূল পথ। ছবি: আনোয়ার হোসেন

ময়মনসিংহ বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারে প্রতিদিনই শত শত বইপ্রেমী, সাহিত্যানুরাগী ও কবি-সাহিত্যিকদের সমাগম ঘটে। সপ্তাহে দুই দিন ছুটি থাকে এই গ্রন্থাগারে। বাকি পাঁচ দিনই এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে এখানে।

গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ বলছে, ১৯৬৯ সালের ১০ জানুয়ারি ময়মনসিংহ শহরের ছোট বাজার এলাকায় একটি দ্বিতল ভবনের দ্বিতীয় তলায় এই গ্রন্থাগার প্রথম চালু হয়। পরে এটি শহরের টাউন হল এলাকার সার্কিট হাউস মাঠের এক পাশে স্থানান্তরিত হয়। ভবনটি চারতলা হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা এক তলা ভবনেই রয়ে গেছে। প্রথমে গ্রন্থাগারটির নাম কী ছিল, তা জানা যায়নি। বাংলাদেশ হওয়ার পর এর নামকরণ করা হয় ‘রিজিওনাল সেন্টার ফর বাংলাদেশ কাউন্সিল’। ১৯৮২ সালে এর নামকরণ করা হয় ‘জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার, ময়মনসিংহ’। বিভাগ ঘোষণা হওয়ার পর চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি এর নাম হয় বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার, ময়মনসিংহ।

নানান বয়সরে পাঠকরে আগমন হয় গ্রন্থাগারে। ছবি: আনোয়ার হোসেন।
নানান বয়সরে পাঠকরে আগমন হয় গ্রন্থাগারে। ছবি: আনোয়ার হোসেন।

গ্রন্থাগারটিতে বইয়ের সংখ্যা ৬১ হাজারের ওপরে। গল্প, কবিতা, উপন্যাস, ইতিহাস এবং দেশি-বিদেশি সাহিত্যের অনেক বিখ্যাত বই রয়েছে এখানে। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অনেক পত্রিকাও আছে এই গ্রন্থাগারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে এই গ্রন্থাগারের নিবন্ধিত পাঠকসংখ্যা প্রায় ১ হাজার। তবে একসঙ্গে বেশি মানুষের পড়ার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই গ্রন্থাগারের ভেতরে।

সুমন মিয়া নামের এক পাঠকের সঙ্গে কথা হয়। তিনি আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়েন। সুমন বলেন, নিয়মিত আসেন এখানে। গল্প-কবিতা, উপন্যাস ও ছোট গল্পের বই পড়েন। চাকরির প্রস্তুতির পড়াও এখানে পড়েন তিনি। তবে মাঝেমধ্যে এখানে বসার জায়গা পাওয়া যায় না।

নিঃশব্দে চলছে পড়াশোনা। ছবি: আনোয়ার হোসেন।
নিঃশব্দে চলছে পড়াশোনা। ছবি: আনোয়ার হোসেন।

বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে এই গ্রন্থাগারে আবৃত্তি-চিত্রাঙ্কনসহ নানা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। তবে জায়গার অভাবে এসব আয়োজনও সুচারুভাবে করা যায় না।

গ্রন্থাগারের বর্তমান সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, স্থান সংকুলান না হওয়ায় নতুন কোনো বইয়ের প্রস্তাবনা পাঠানো যাচ্ছে না। নতুন পাঠকদের জন্য জায়গা করে দেওয়া কষ্টসাধ্য হচ্ছে। ভবনটি যদি চার তলা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হতো, আর জায়গা নিয়ে কোনো চিন্তা থাকত না।