নিবন্ধন অধিদপ্তরের দায় ভূমি মন্ত্রণালয় নেবে না: ভূমিমন্ত্রী

সাইফুজ্জামান চৌধুরী
সাইফুজ্জামান চৌধুরী

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ‘নিবন্ধন অধিদপ্তরের কোনো কাজের অর্থাৎ ভূমি নিবন্ধনের দুর্নীতির দায় ভূমি মন্ত্রণালয় নেবে না। তাঁরা (সাবরেজিস্ট্রার) আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করেন। আমি ইতিমধ্যে প্রস্তাব দিয়েছি যেন নিবন্ধন অধিদপ্তরকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন আনা হয়।’

আজ বুধবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ব্রিফিং চলাকালে টিআইবির সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদন-সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এসব কথা বলেন।

দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি) তাদের এক গবেষণায় বলেছে, ভূমি নিবন্ধন সেবার প্রতিটি পর্যায়ে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে। এতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। দলিল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ১ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়মবহির্ভূতভাবে লেনদেন হয়। 
গত সোমবার রাজধানীতে গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরে টিআইবি।

আজ ভূমিমন্ত্রী বলেছেন, জনস্বার্থে তাদের (নিবন্ধন অধিদপ্তর) হয় ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আসতে হবে, না হলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে প্রতিটি ক্ষেত্রে সহমতে থেকে কাজ করতে হবে।

এর আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার ভূমিমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বেসরকারি খাত একীকরণ কর্মকর্তা মিজ রেবেকা রবিনসন এ সময় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন।

ভূমিসচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটোয়ারী এ সময় ভূমিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

ভূমিমন্ত্রী বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনা ও এর ডিজিটালাইজেশনের বিভিন্ন পরিকল্পনার ব্যাপারে রাষ্ট্রদূতকে জানান। রাষ্ট্রদূত এ সময় ভূমিমন্ত্রীকে ভূমি উন্নয়নবিষয়ক যেকোনো সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘এখন আমাদের তদারকির কারণে দুর্নীতি করা এত সহজ হচ্ছে না। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি ভূমি সেক্টরে মন্ত্রণালয় পর্যায়ের দুর্নীতি এখন একেবারে কমে এসেছে। আমরা এখন মাঠ পর্যায়ে দুর্নীতি কমানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

মন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে আরও বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় একটি সেবামুখী মন্ত্রণালয়। ভূমি ব্যবস্থাপনা স্বয়ংক্রিয় হয়ে গেলে দুর্নীতির পরিমাণ কম হবে ও উন্নত সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের গ্রাউন্ড জিরো উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এ ছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেরও প্রশংসা করে আর্ল রবার্ট মিলার বলেন ‘বোস্টন, হার্ভার্ডসহ নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কনফারেন্সে উদীয়মান বাংলাদেশের ব্যাপারে আলোচনা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রদের ‘সুপারস্টার’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, তাঁরা (তাঁদের জীবন) আমেরিকান সফলতার গল্পের চিরায়ত উদাহরণ। বিদেশে কাজ করা বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, তাঁরা খুবই পরিশ্রমী ও বিশ্বস্ত।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের ৫০ বছরের স্বাধীনতা উদযাপনে সহায়তা প্রদানের আশা ব্যক্ত করছি।’

রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর ভূমিমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফ করেন। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।