সদরঘাটে বন্দর কর্মকর্তা ও আনসারদের ওপর হামলা, আহত ১০

উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে নৌযান শ্রমিক ও হকারদের হামলা। সদরঘাট টার্মিনাল, ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর। ছবি: সংগৃহীত
উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে নৌযান শ্রমিক ও হকারদের হামলা। সদরঘাট টার্মিনাল, ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর। ছবি: সংগৃহীত

উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল এলাকায় নৌযান শ্রমিক ও হকারদের হামলায় ৭ আনসার সদস্যসহ ১০ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে লঞ্চের জানালার কাচ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হচ্ছেন আনসার কমান্ডার মোক্তার হোসেন (৫০), আনসার সদস্য ছিদ্দিকুর রহমান (৪৮), মো. পলাশ (৪২), আল আমিন (৩৫), আবু সাঈদ (২৮), মো. খালেক (৩২), টার্মিনালের কর্মচারী আল আমিন, জহিরুল ইসলাম (৫৮) ও নুর মোহাম্মদ। অহত অপর একজনের নাম প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।

সদরঘাট টার্মিনাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বেলা তিনটার দিকে ঢাকা নদীবন্দরের ‍যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন, সহকারী পরিচালক মো. নুর হোসেন ও সুপারভাইজার মনিরুল ইসলামসহ কয়েকজন আনসার সদস্য ওয়াইজঘাট টার্মিনাল এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানে যান। তাঁরা টার্মিনালে নোঙররত সুন্দরবন-৯ লঞ্চের ভেতর হকারদের ফল ও বিস্কুটের ঝুড়ি দেখতে পেয়ে লঞ্চে ওঠেন। লঞ্চের ডেকের সামনে রাখা ফলের ঝুড়ি অপসারণ করতে গেলে লঞ্চের কর্মচারীরা বাধা দেন। এতে লঞ্চের কর্মচারী ও হকারদের সঙ্গে তাঁদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে লঞ্চের কর্মচারী ও হকাররা এক হয়ে বন্দর কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যদের ওপর হামলা চালান।

সদরঘাট টার্মিনালের আনসার কমান্ডার মোক্তার হোসেন বলেন, ‘সুন্দরবন-৯ লঞ্চে থাকা হকার উচ্ছেদ করতে গেলে লঞ্চের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় অস্ত্র ও জীবন রক্ষার্থে আনসার সদস্যরা সেখান থেকে পালিয়ে আসার সময় আমাদের আটকে রেখে পন্টুনে ফেলে মারধর করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে আনসার সদস্য ছিদ্দিকুর রহমান ও মো. খালেককে চিকিৎসার জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

সুন্দরবন-৯ লঞ্চের সুপারভাইজার ইউনুস মিয়া বলেন, ‘বন্দর কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যদের ওপর কে বা কারা হামলা করেছে আমি তা জানি না। তা ছাড়া আমি লঞ্চে ছিলাম না।’ তিনি আরও বলেন, ‘অহেতুক আনসার সদস্যরা আমাদের লঞ্চের লোকজনকে মারধর করেছে। লঞ্চের মাস্টার ও টিকিট কাউন্টারের জানালার কাচ ও মালামাল ভাঙচুর করা হয়েছে।’

সুন্দরবন গ্রুপের পরিচালক মো. ঝন্টু মিয়া বলেন, ‘আমাদের লঞ্চে হকার উঠতে নিষেধ রয়েছে। হকাররা আমাদের লঞ্চে উঠতে গেলে কর্মচারীরা হকারদের বাধা দেয়। আনসারদের ওপর হামলার ঘটনায় আমাদের লঞ্চের লোকজন জড়িত ছিল না। কিন্তু বন্দর কর্মকর্তাদের নির্দেশে আনসার সদস্যরা অহেতুক আমাদের লোকজনদের মারধর করেছে এবং লঞ্চের জানালার কাচ ও মালামাল ভাঙচুর করেছে।’

ঢাকা নদীবন্দরের ‍যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফউদ্দিন বলেন, ‘হকার উচ্ছেদ করতে গেলে নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে হকাররা মিলিত হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে আনসার সদস্যসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বন্দরের সহকারী পরিচালক নুর হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।’

এদিকে বিকেল পাঁচটার দিকে সুন্দরবন লঞ্চ, জামাল লঞ্চসহ কয়েকটি লঞ্চের শ্রমিক ও হকাররা তাঁদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে সদরঘাট টার্মিনাল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা বন্দর কর্মকর্তা আরিফ উদ্দিনের অপসারণ দাবি করেন।