ঢাকায় বাস আটকে দিয়ে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে

ছাত্রলীগ নেতা আরিফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
ছাত্রলীগ নেতা আরিফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মিরপুর এলাকার বাস কোম্পানির কাছ থেকে চাঁদা দাবি করার অভিযোগে আরিফুল ইসলাম (৩০) নামের এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত আরিফুলকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

আরিফুল ইসলাম ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহসভাপতি। তিনি যশোরের বাসিন্দা।

মিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক সৈয়দ মোহাম্মদ আক্তার হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চাঁদা দাবি করার অভিযোগে শনিবার আরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন প্রজাপতি পরিবহনের কর্মকর্তা মো. তানজীল। মামলায় তিনি দাবি করেন, আসামি আরিফুল তাঁর কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এম রফিকুল ইসলামের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। ১৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মিরপুরের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের কোম্পানির পাঁচটি বাস আটকে দেন আরিফুলসহ তাঁর সহযোগী ১৫ জন। তখন বাসে থাকা যাত্রীদের নামিয়ে দেয় আসামিরা। বাসের চালক ও সহকারীদের কাছে টাকা দাবি করেন আসামিরা। টাকা দিতে না চাওয়ায় সে সময় বাসচালক ও সহকারীদের মারধর করা হয়। এ সময় রফিকুলের কাছে আসামি আরিফুল ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দাবি করার বিষয়টি রফিকুল ইসলাম মিরপুর থানাকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি বাস উদ্ধার করে।

প্রজাপতি পরিবহনের মালিক রফিকুল ইসলাম সোমবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, চার মাস ধরে আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে তাঁর সহযোগীরা প্রজাপতি কোম্পানির কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। বাস আটকে কয়েক হাজার টাকা চাঁদাও নিয়েছেন আসামিরা। মোবাইল ফোনেও আরিফুল একাধিকবার চাঁদা দাবি করেছেন। তিনি বলেন, চাঁদা না দিলে আসামি ও তাঁর সহযোগীরা বাসের কাচ ভেঙেও দিয়েছেন একাধিকবার।

আরিফুলকে রোববার আদালতে হাজির করে তিন দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম। আদালতে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, আরিফুল তাঁর লোকজন নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন।

বাসে চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে আরিফুলের আইনজীবী আদালতের কাছে দাবি করেন, হয়রানি করার জন্য এই মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। চাঁদাবাজির সঙ্গে আরিফুল জড়িত নন।

ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের (উত্তর) সভাপতি মো. ইব্রাহীম সোমবার রাতে টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গত শনিবার প্রজাপতি পরিবহনের বাস আটকে দিয়ে চাঁদাবাজি করার অভিযোগে ছাত্রলীগের সহসভাপতি (উত্তর) আরিফুলকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোনো চাঁদাবাজ তাঁদের সংগঠনে থাকতে পারবে না।

মিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক সৈয়দ মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, বাসে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।