নির্মাণের দেড় বছরেই ফাটল

দেড় বছরের মাথায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়ালে ফাটল। গতকাল দুপুরে।   প্রথম আলো
দেড় বছরের মাথায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়ালে ফাটল। গতকাল দুপুরে। প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি প্রায় দেড় বছর আগে নির্মিত হয়। এরই মধ্যে হাসপাতালের ভবনটির দেয়ালের নিচে বিভিন্ন স্থানে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাটল দেখা দেওয়া কয়েকটি স্থানে পলেস্তারা করে দিয়েছে। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানায়, উপজেলার বাছিরপুর এলাকায় মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের এক পাশে ৫ একর জমিতে চারতলা ভিতবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নির্মিত হয়েছে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এ কাজটি করায়। ঢাকার ‘এস আলী অ্যান্ড সন্স’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এটি নির্মাণ করেছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকা। নির্মাণকাজ শেষের পর ২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর ভবনটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত বছরের (২০১৮) ৪ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির উদ্বোধন করেন। বর্তমানে সেখানে বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগের কার্যক্রম চলছে। 

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ও পেছনে দেয়ালের নিচের বিভিন্ন স্থানে আঁকাবাঁকা ফাটল দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি স্থান পলেস্তারা করে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্তত তিনজন কর্মচারী বলেন, হাসপাতালের কার্যক্রম শুরুর পর কয়েকটি স্থানে তাঁরা ফাটল দেখতে পান। এর পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন এসব স্থানে পলেস্তারা করে দেন। পরে আরও কিছু স্থানে ফাটল দেখা দেয়। 

বাছিরপুর এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ আলতাফ হোসেন বলেন, নির্মাণকাজে ত্রুটির কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ভবনটি ঝুঁকির মধ্যে আছে কি না তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা দরকার। 

উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সমরজিৎ সিংহ বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের তাঁর বেশি দিন হয়নি। আগের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাটলের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না তাঁর জানা নেই।

জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক আবু তাহের বলেন, নিচু জায়গায় মাটি ভরাট করে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। মাটি দেবে ফাটল দেখা দিতে পারে। এটা বড় ধরনের কোনো সমস্যা নয় বলে দাবি করেন। 

স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান বলেন, পলেস্তারার কাজে সমস্যার কারণে ফাটল দেখা দিতে পারে। আবার কাঠামোগত সমস্যার কারণেও এ সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া কিছু বলা যাবে না। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।