এক মামার হাত ধরে উত্থান জয়নালদের, ঘরেই নিবন্ধন করতেন এনআইডি

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নির্বাচন কার্যালয়ের খোয়া যাওয়া ল্যাপটপে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতি করে কোটিপতি বনে যাওয়া জয়নাল আবেদীন চাকরি পান তাঁর মামার হাত ধরে। ওই মামা হলেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ জকরিয়া। ২০০৪ সালে জকরিয়ার হাত ধরে জয়নাল এবং তাঁদের আরও অন্তত ১০ স্বজন ইসির বিভিন্ন কার্যালয়ে নিয়োগ পান।

জয়নাল ও জকরিয়া দুজনের বাড়িই বাঁশখালীতে। গ্রেপ্তার জয়নালের ভগ্নিপতি নুর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোহাম্মদ জকরিয়া আমার স্ত্রীর মামা হন।’ নুর আহমেদ নিজেও চট্টগ্রামের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত।

এ ছাড়া জয়নালের খালাতো ভাই মোজাফফর কক্সবাজার নির্বাচন কার্যালয়ে কর্মরত। জয়নালের আরেক আত্মীয় মোহাম্মদ আলী রাঙামাটি ও আলীর ভাগনে ওসমান গনি ঢাকা নির্বাচন কমিশনে কর্মরত। জয়নালের বোন রোজিনার স্বামী নুর আহমেদ জানান, তাঁরা সবাই জকরিয়ার হাত ধরে চাকরিতে ঢোকেন।

এ বিষয়ে জানতে মোহাম্মদ জকরিয়াকে ফোন করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে এক নারী বলেন, তিনি (জকরিয়া) এখন কথা বলতে পারবেন না।

জয়নাল তাঁর স্বজনদের ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের ভুয়া এনআইডি করে দিতেন বলে জানান দুর্নীতি দমন কমিশনের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় জকরিয়াকে ওএসডি করা হয়।

ঘরেই ভুয়া এনআইডি নিবন্ধন
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জয়নাল জানিয়েছেন, ইসির খোয়া যাওয়া ল্যাপটপ ব্যবহার করে তাঁরা দেওয়ান বাজারের বাসায় বসেই এনআইডি তৈরি করতেন। ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায় একটি এনআইডি তৈরি করা হতো বলে তিনি পুলিশকে জানান।

জয়নালকে গত সোমবার প্রথমে আটক করে নির্বাচন কমিশনের তদন্ত দল। এ সময় তাঁর পকেটে একটি ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়ার ডিভাইস পাওয়া যায়। ওই ডিভাইসটি কমিশনের সরবরাহ করা নাকি বাজার থেকে সংগ্রহ করা, তা নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্তকারী কর্মকর্তা।

দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা মো. শরিফ উদ্দিন বলেন, ল্যাপটপ এবং এসব ডিভাইস ব্যবহার করে দেওয়ানবাজারের ঘরে বসে ভুয়া এনআইডি নিবন্ধন করতেন জয়নাল এবং তাঁর সহযোগীরা। জয়নাল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।