৩৬ চিকিৎসক ও কর্মকর্তার মরণোত্তর চক্ষু দান

ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মকর্তাসহ ৩৮ জন মরণোত্তর চক্ষু দান করেছেন। ঢাকা, ১৯ সেপ্টেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মকর্তাসহ ৩৮ জন মরণোত্তর চক্ষু দান করেছেন। ঢাকা, ১৯ সেপ্টেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের কর্নিয়া বিভাগের ৩৬ চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী মরণোত্তর চক্ষু দান করেছেন। এ তালিকার বাইরে একজন চিকিৎসকের স্বামী ও ছেলে তাঁদের চক্ষু দান করেন। সব মিলিয়ে ৩৮ জন আজ বৃহস্পতিবার হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে এ সংক্রান্ত কাগজপত্র হস্তান্তর করেন।

অনুষ্ঠানে হাসপাতালের অধ্যাপক সারোয়ার আলম বলেন, রোগীরা অন্যের কাছ থেকে কর্নিয়া পেয়ে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাচ্ছে। যে কারণে আশা করা যায়, যারা অন্যের কর্নিয়া নিয়ে দৃষ্টি শক্তি ফিরে পায় তাদের পরিবারের সদস্যরা মরণোত্তর চক্ষুদানে এগিয়ে আসবে। কিন্তু ধর্মীয় কারণে বেশির ভাগ মানুষই রাজি হয় না। সব মানুষ যাতে মরণোত্তর চক্ষু দানে এগিয়ে আসে সে জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

হাসপাতালের কর্নিয়া বিভাগের প্রধান চন্দনা সুলতানা নিজে মরণোত্তর চক্ষু দান করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিভাগ থেকেই প্রথম চালু করলাম। এতে উৎসাহিত হয়ে হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগও মহৎ এই কাজে এগিয়ে আসবে বলে আমরা আশা করি।’ তিনি জানান, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁর স্বামী আর ছেলে ও চক্ষু দান করেছেন।

কুমিল্লার দেবীদ্বারের জয়নাল আবেদীনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর দুটি চোখের কর্নিয়া নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। অন্যের চোখের কর্নিয়া নিয়ে তিনি এখন দেখতে পান। তাঁর চোখে সফলভাবে অস্ত্রোপচার করেছেন ইস্পাহানি চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। জয়নাল আবেদীন বলেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যের ওমানে কাজ করতেন। চোখের সমস্যা হওয়ায় দেশে ফিরে আসেন এবং গরু ও মুরগির খামার গড়ে তোলেন। কিন্তু চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর তার কাছে সবকিছু অর্থহীন মনে হয়েছিল। এখন তিনি আবার ভাবতে শুরু করেছেন, জীবনের অনেক মানে আছে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মৃদুল কুমার সরকার, আই ব্যাংকের প্রধান রাশেদুল আলম এবং কর্নিয়া বিভাগের অন্যান্য চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা।