পুকুরে স্কুলছাত্রীর লাশ, পরিবারের দাবি হত্যা

নিহত স্কুলছাত্রী সাদিয়া সামাদ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত স্কুলছাত্রী সাদিয়া সামাদ। ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় বাড়ির পাশের পুকুর থেকে এক স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলার ছোটদাপ এলাকা থেকে আজ শুক্রবার সকালে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় ওই স্কুলছাত্রী।

নিহত স্কুলছাত্রীর নাম সাদিয়া সামাদ (১৪)। সে ছোটদাপ এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আবদুস সামাদের মেয়ে। স্থানীয় আটোয়ারী সরকারি পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে।

এদিকে স্কুলছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সাদিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে আটোয়ারী থানায় প্রতিবেশী তিন কিশোরকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। মামলার পর অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে প্রধান আসামি এখনো পলাতক।

নিহত স্কুলছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবেশী এক কিশোর সাদিয়াকে অনেক দিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। রাজি না হওয়ায় একাধিকবার সাদিয়াকে হুমকি দেয় সেই কিশোর। সম্প্রতি সাদিয়াকে নিয়ে এক বন্ধুর সঙ্গে ওই কিশোরের মারামারির ঘটনা ঘটে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে সাদিয়াদের বাড়িতে যায় ওই কিশোর। সাদিয়ার জন্যই তাকে মার খেতে হয়েছে এমন কথা বলে রাতের মধ্যেই ‘কিছু একটা’ করার হুমকি দেয় সে। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নিখোঁজ হয় সাদিয়া। রাতভর খুঁজেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে বাড়ির পেছন দিকের পুকুরে সাদিয়ার লাশ ভেসে থাকতে দেখেন পরিবারের সদস্যরা।

সাদিয়ার মা খায়রুন নাহার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাদিয়া ঘরে বসে পড়ছিল। ওকে ঘরে রেখে আমি পাশের বাড়িতে যাই। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে দেখি মেয়ে ঘরে নেই। খোঁজাখুঁজি করে কোথাও পাইনি। পরে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান গোলাপের বাড়িতে এনে ওই তিন কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বিকেলে যে ছেলেটি আমাদের বাড়িতে এসেছিল, সে তখন কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে বাকি দুই কিশোরকে পুলিশে দেওয়া হয়। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’

জানতে চাইলে প্রধান অভিযুক্ত কিশোরের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বৃহস্পতিবার আমার ছেলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সাদিয়ার সঙ্গে কথা বলে। এ কারণে আরেক কিশোর তাকে মারধর করে। এর বিচার দিতে মেয়েটির বাড়িতে যায় আমার ছেলে। আমার নির্দোষ ছেলেকে ফাঁসানো হচ্ছে।’

আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার জন্য লাশ ময়নাতদন্ত করতে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে লাশের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত তিন কিশোরের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।