সাত দিন পর ফিরলেন মা, নবজাতককে নিতে চান না

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

হাসপাতালে জন্মের পরদিন নবজাতককে ওয়ার্ডে ফেলে রেখে চলে যান বাবা-মা। আজ রোববার সেই মা হাসপাতালে ফিরে ওই নবজাতককে কারও কাছে দত্তক দিতে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান। পরে ওই মাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

‘নবজাতককে হাসপাতালে রেখে চলে গেলেন মা-বাবা’ শিরোনামে ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

আজ সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন মুঠোফোনে বললেন, আজই নবজাতককে হাসপাতাল থেকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে ছোটমণি নিবাসে হস্তান্তর করার কথা ছিল। পরে জানা গেল, নবজাতকের মা এসেছেন। তাঁরা ভেবেছিলেন নবজাতককে নিতে এসেছেন মা। তবে ওই মা আবেদন জানান, তিনি নবজাতককে পারিবারিক সমস্যার কারণে সঙ্গে নিতে পারবেন না। কারও কাছে নবজাতককে দত্তক দেওয়ার কথা বলেন তিনি।

পরিচালক নাসির উদ্দিন আরও বলেন, নবজাতককে হাসপাতালে ফেলে যাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে শাহবাগ থানায় জানানো হয়েছিল। তাই আজ এই মা আসার পর আবার পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ তাঁকে থানায় নিয়ে যায়। নবজাতকের বাবাকেও পাওয়া যাচ্ছে না। এখন আইনগতভাবে আদালত যে আদেশ দেবেন, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের প্রধান মনীষা ব্যানার্জি প্রথম আলোকে বললেন, নবজাতকটি সুস্থ আছে। দত্তক দেওয়ার বিষয়টিও আদালতের মাধ্যমেই নিষ্পত্তি হবে।

শাহবাগ থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আসমা আক্তার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ওই মা এখন থানাতেই আছেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই মা জানিয়েছেন, প্রথম স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হলে তিনি আরেকজনকে বিয়ে করেন। প্রথম স্বামীর ঘরে এক সন্তান আছে। অন্যদিকে, দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে কয়েক মাস থাকার পর ওই স্বামী তাঁকে ফেলে চলে যান। এই সময় আবার প্রথম স্বামী তাঁকে ফিরিয়ে আনেন। একপর্যায়ে প্রথম স্বামী জানতে পারেন, ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা ও বর্তমান নবজাতকের বাবা ওই দ্বিতীয় স্বামী। এই নিয়েই আবার ঝগড়ার সূত্রপাত হয়। সন্তান জন্মের পর এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হলে নবজাতককে ফেলে চলে গিয়েছিলেন।

এসআই আসমা আক্তার বললেন, এই নারীর বাবা বা বর্তমান স্বামী কিংবা একজন অভিভাবককে থানায় আনার জন্য যোগাযোগ করা হচ্ছে। অভিভাবক আসার পর এই নারী ও নবজাতকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই নবজাতকের জন্ম হয়। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সে মায়ের সঙ্গে গাইনি বিভাগের ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ছিল। তবে সন্ধ্যার পর থেকেই তার মা-বাবাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় নবজাতককে হাসপাতালের নবজাতক বিভাগে স্থানান্তর করে বিভাগের স্ক্যাবুতে রাখা হয়। তারপর থেকে নবজাতকটি মা ছাড়া সেখানেই রয়েছে।