ছুটির দিনে বাড়িতে বসে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা হতো

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চট্টগ্রাম অফিসের অফিস সহকারী জয়নাল আবেদীনসহ আরও কয়েকজন সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার বাড়িতে বসে রোহিঙ্গাদের ভোটার করার কাজ করতেন। এ কাজের জন্য তাঁরা বৃহস্পতিবার কাজ শেষে ইসির ল্যাপটপ ও মডেম বাসায় নিয়ে যেতেন।

আজ সোমবার ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।

সাইদুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের ডবলমুরিং ও চন্দনাইশ এবং কক্সবাজার সদরসহ আরও কয়েকটি উপজেলায় ইসির ল্যাপটপের অপব্যবহার হয়েছে। অফিস সহকারীরা সপ্তাহের শেষ দিনে কাজ শেষে ল্যাপটপ ও সার্ভার সংযোগের মডেম নিয়ে বাসায় চলে যেতেন। এরপর তাঁরা শুক্র ও শনিবার রোহিঙ্গাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে ভোটার করতেন। রোববার অফিসে এসে ল্যাপটপ ও মডেম যথাস্থানের রেখে দিতেন। এর দায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা অফিসারের।

ইসির বিশেষ তদন্ত দলের এক কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্র থেকে ইসির নজরদারির দুর্বলতা এবং মাঠ কর্মকর্তাদের খামখেয়ালি কিংবা তাঁদের যোগসাজশেই অফিস সহকারী ও ডেটা এন্ট্রি অপারেটররা ২০১১ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রোহিঙ্গাদের ভোটার করার কাজ করে আসছেন। মাঝেমধ্যে দু-একজন অপকর্ম করে ধরা পড়লেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যে কারণে রোহিঙ্গাদের ভোটার করার প্রবণতা দিন দিন বেড়েছে।

আজ ইসিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাইদুল ইসলাম বলেন, ইসির তদন্ত দল রোহিঙ্গাদের ভোটার করা বড় একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে। এই চক্রে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের কয়েকজন জনপ্রতিনিধিও আছেন। তাঁদের সঙ্গে ইসির ১৫ জনের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত। তদন্তের স্বার্থে আপাতত তাঁদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না। নাম বললে তাঁরা পালিয়ে যাবেন। তখন ইসির হারানো ল্যাপটপ ও মডেম কিছুই আর পাওয়া যাবে না।

সাইদুল ইসলাম আরও বলেন, যাঁরা এই অপচেষ্টার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বেশির ভাগই ইসির থেকে আগে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। তাঁরা ইসির বিভিন্ন প্রকল্পেও কাজ করেছেন।